২ বিধায়কের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হলে সুবিধা পাবে শাসকদল? অঙ্ক কষা শুরু

২ বিধায়কের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হলে সুবিধা পাবে শাসকদল? অঙ্ক কষা শুরু

কলকাতা: দলবদল আবহে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কী অবস্থা তা সকলের ভাল করে জানা। বিগত কয়েক সপ্তাহে যে ভাবে একাধিক বিধায়ক এবং মন্ত্রী দল ছেড়েছেন তাতে স্বাভাবিকভাবেই ভোটের আগে অস্বস্তি বেড়েছে শাসক শিবিরে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই হঠাৎ উলট পুরাণ! বিধানসভায় আচমকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে এলেন একদা তৃণমূলে থাকা বিজেপির দুই বিধায়ক সুনীল সিংহ এবং বিশ্বজিৎ দাস। সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অঙ্ক কষা শুরু। তাহলে কি তারা ফের একবার ঘাসফুল ধরতে চলেছেন? দলবদলে পিছিয়ে থাকা তৃণমূল কি আবার ‘বাউন্স ব্যাক’ করতে পারে? এই সবের মধ্যে আরও একটি প্রশ্ন জ্বলজ্বল করছে। তা হল, দুই বিধায়কের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হলে কতটা সুবিধা পাবে শাসকদল?

দলবদলুদের নিয়ে কটাক্ষ করার সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে যারা দল ছেড়ে যাচ্ছেন তাদের আর ফেরত নেওয়া হবে না। পাশাপাশি যারা গেছেন তাদের নাকি এমনিতেই টিকিট দিত না তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং, এই দুই বিধায়ক যদি দলে আসেন তাহলে কিছুটা হলেও মমতা নিজের কথার নিজেই খেলাপ করবেন। তবে বিষয় হল, এরা কেউই এই বিধানসভা নির্বাচনের আবহে দলত্যাগ করেননি, করেছেন আগে। তাই এনাদের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য নাও হতে পারে। জানা গিয়েছে, এদিনের সাক্ষাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে জিজ্ঞেস করেছেন ‘ডিসিশনের’ ব্যাপারে। তাই ধরে নেওয়া যায় এ ব্যাপারে কিছু জল্পনা পরবর্তী ক্ষেত্রে সত্যি হতেই পারে। সেক্ষেত্রে দাপিয়ে খেলা আরম্ভ করতেই পারেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কারণ, বিজেপির এই দুই বিধায়ক তৃণমূলে ফিরলে ভোটের প্রাক্কালে অবশ্যভাবে মুখ পুড়বে বিজেপির; যে পরিপ্রেক্ষিতে তারা তৃণমূলকে আক্রমণ করছিল, সেই আক্রমণ এবার তাদেরকেও সামলাতে হবে। সেই সঙ্গে ওই দুই বিধায়কের সংগঠন কাজে লাগাবে তৃণমূল, তাদের অনুগামীদের বড় অংশ ঘুরে যাবে ঘাসফুলের দিকে। 

আরও পড়ুনতৃণমূলে ফিরছেন বিজেপিতে যাওয়া ২ বিধায়ক? কী আলোচনা হল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে?

উল্লেখ্য, এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হল, সেই নিয়ে মুখ খোলেন দুই বিধায়কই। বিশ্বজিত জানান, বিধায়ক তহবিলের টাকার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ৯৬ লক্ষ টাকা পঞ্চায়েত সমিতিতে এবং ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পিডব্লিউডিকে দেওয়া রয়েছে যার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা স্টেডিয়াম বানানোর জন্য। সেই টাকা দিয়ে কাজ হচ্ছে না এই প্রসঙ্গে কথা বলতেই এদিন তিনি বিধানসভা আসেন বলে জানিয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রশ্ন করা হয় যে তিনি ভোটের আগে দলবদল করবেন কিনা। সে বিষয়ে অবশ্য কোনো প্রত্যক্ষ উত্তর দিতে যাননি বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, আজকের সাক্ষাতের সঙ্গে দলবদলের কোন সম্পর্ক নেই।

এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাই গুরুজন হিসেবে তাঁকে প্রণাম করেছেন। অন্যদিকে অন্য একজন বিধায়ক সুনীল সিংহ জানান, তিনি একজন বিধায়ক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রেক্ষিতে বিধানসভায় তিনি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতে পারেন। উন্নয়নমূলক কাজের সাহায্য চাইবার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, এর সঙ্গে দলবদলের কোন সম্পর্ক নেই। তবে রাজনিতিতে যে ভবিষ্যৎ বড়ই টলমল, তা সকলের জানা। সম্পর্ক কখন তৈরি হয়ে যায় আবার…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − two =