স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে চরম নাজেহাল রোগী, ফেরাল সরকারি হাসপাতাল!

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে চরম নাজেহাল রোগী, ফেরাল সরকারি হাসপাতাল!

কলকাতা:  সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করতে সকলকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়া হবে বেল জানিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, যে হাসপাতাল এই কার্ড গ্রহণ করবে না তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে৷ কিন্তু এবার সরকারি হাসপাতালেই নাজেহাল হতে হল রোগীকে৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে যাওয়া এক রোগীর সঙ্গে চূড়ান্ত দুর্ব্যবহার করা হল এসএসকেএম হাসপাতালে৷ একই ব্যবহার মিলল এনআরএস হাসপাতালেও৷ 

আরও পড়ুন-  বন সহায়ক নিয়োগ মামলায় অস্বস্তিতে রাজ্য, হলফনামা চাইল হাইকোর্ট

মঙ্গলবারই রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, ২ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করেছেন৷ কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে রোগীকে কী পরিমাণ হয়রান হচ্ছে এদিনের ঘটনা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ৷ বাগুইহাটির বাসিন্দা ৫২ বছরের গায়েত্রী দাস লিভারের সমস্যায় ভুগছেন৷ তাঁর লিভরে জল জমে গিয়েছে৷ এই অবস্থায় মঙ্গলবার ভর্তি হতে গেলে তাঁকে তিন তিনটি হাসপাতাল থেকে তাঁকে বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ গ্রহণ করা হয়নি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড৷ 

এর পর তাঁকে নিয়ে আসা হয় এনআরএস হাসপাতালে৷ সেখানে বলা হয়, এখানে গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগ নেই৷ রোগীকে এসএসকেএম-এ নিয়ে যেতে বলা হয়৷  এসএসকেএম-এ আনার পর বলা হয় এখন দেখানো যাবে না৷ বুধবার সকালে আউটডোরে দেখাতে হবে৷ সেই মতো আজ সকালে গায়েত্রীদেবীর পরিবারের লোকজন তাঁকে আউটডোরে দেখান৷ চিকিৎসক তাঁকে  ভর্তি নেওয়ার হবে বলে জানান৷ সেই মতো গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় গায়েত্রী দাসকে৷ সেখানে গেলে বলা হয় বেড নেই৷ সখান থেকে তাঁরা মরণাপন্ন রোগীকে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে যায়৷ অভিযোগ,  হাসপাতালের এক মহিলা আধিকারিক সম্ভবত অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছুড়ে ফেলে দেন৷ বলেন, কার্ড থাকলেও ভর্তি নেওয়া যাবে না৷ এমনকী গায়েত্রীদেবীর মেয়ের মুখের উপর অ্যাডমিশনের কাগজ ছুড়ে মারেন বলেও অভিযোগ৷      

আরও পড়ুন- খালি গায়ে, বাটি হাতে রাজপথে মাদ্রাসার শিক্ষকদের কাফন আন্দোলন

এদিকে গতকালই অর্ডার বেরিয়েছে, এখান থেকে কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালের অধ্যক্ষ হয়ে যাচ্ছেন এসএসকেএম-এর সুপার৷ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,  এমন ঘটনা ঘটতে পারে না৷ কেউ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছুড়ে ফেলতে পারেন না৷ বেড না থাকলে আমাদের কিছু করার নেই৷ তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে৷ 

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে এমন ব্যবহার করা হলে বেসরকারি হাসপাতালে কী হবে? এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ জমছে৷ এদিকে রোগীর পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখানোর পরই তাঁদের বলা হয় এই কার্ডে ভর্তি নেওয়া হবে না৷ তাঁদের কথায়, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থসাথী কার্ড করানোর পর যদি বলা হয় এর কোনও মূল্য নেই, তাহলে এই কার্ড দেওয়া হচ্ছে কেন? 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + fourteen =