ওট্টাওয়া: মস্তিষ্ক আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ৷ মস্তিষ্কের ইশারাতেই পরিচালিত হই আমরা৷ আমাদের মস্তিষ্কে ঘটে হাজারো চিন্তার সমাগত৷ সম্প্রতি কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মস্তিষ্ক নিয়ে নতুন চিন্তাধারার উদঘাটন করেছেন৷ তাঁরা জানিয়েছে, প্রতিদিন আমাদের মস্তিষ্কে ৬ হাজারেরও বেশি চিন্তাভাবনা তৈরি হয়৷
কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই প্রথম এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার সাহায্যে কখন একটি চিন্তার শেষ এবং অন্যটি শুরু হচ্ছে তা পরোক্ষাভাবে সনাক্ত করা যাবে৷ ড. জর্ডান পপ্পেনক (সাইকোলজি) এবং তার মাস্টার্সের ছাত্র জুলি তাসেং ‘থট ওর্মস’ বা ‘চিন্তার কীটগুলি’ পৃথক করার জন্য একটি পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন৷ যখন কোনও ব্যক্তি একই ধারণার উপর মনোনিবেশ করে তখন একটানা মুহূর্তগুলির ‘থট ওর্মস’গুলি আলাদা করার উপায় তৈরি করেন তাঁরা৷ সম্প্রতি এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে নেচার কমিউনিকেশনে৷
ড.পপ্পেনক বলেন, ‘‘আমরা যাকে ‘থট ওর্মস’ বলি, সেগুলি আসলে মস্তিষ্কে ক্রিয়াকলাপের নিদর্শনগুলির সরল উপস্থাপনার সংলগ্ন বিন্দু৷ প্রতি মুহূর্তে আমাদের মস্তিষ্ক ‘স্টেট স্পেস’-এর বিভিন্ন বিন্দুতে পৌঁছে যায়৷ যখন কোনও ব্যক্তি একটি নতুন চিন্তার দিকে অগ্রসর হয়, তখন একটি নতুন ‘থট ওর্ম’ তৈরি করে, যা আমরা আমাদের পদ্ধতিগুলির সাহায্যে সনাক্ত করতে পারি৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এটাও লক্ষ্য করেছি যে, মানুষ যখন সিনেমা দেখে তখন নতুন কোনও ঘটনা উপস্থিত হলেই ‘থট ওর্ম’গুলির উত্থান ঘটতে থাকে৷’’
পপ্পেনক জানিয়েছেন, “চিন্তাধারা সম্পর্কিত গবেষণার ইতিহাসে চিন্তার স্থানান্তরগুলি এতদিন অধরা ছিল৷ যা প্রায়শই স্বেচ্ছাসেবীদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা বর্ণনা করার উপর নির্ভর করত৷ এটা কোনও বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতি ছিল না৷ নতুন চিন্তার সূত্রপাত পরিমাপ করতে সক্ষম হয়ে আমরা মানুষের ঘুমন্ত মস্তিষ্কের ‘ব্ল্যাক বক্স’-এ উঁকি দেওয়ার সুযোগ পাই৷ চিন্তার সময় এবং গতি অন্বেষণ করা সম্ভব হয়৷’’গত ১৫ বছর ধরে গবেষকরা কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কোনও ব্যক্তি কোন বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন, তা অনুমান করার জন্য মস্তিষ্কের চিত্র ব্যবহার করে কগনিটিভ নিউরোসায়েন্সে বড় অগ্রগতি সাধন করেছেন। তাঁরা মস্কিষ্কের ক্রিয়াকলাপের ইমেজকে মস্কিষ্কের প্যাটার্নগুলির একটি সিরিজের সঙ্গে তুলনা করেন৷
ড. পপ্পেনক বলেন, “একজন ব্যক্তি কী কী ভাবছেন তা বোঝার চেষ্টা করা ছেড়ে তাঁদের চিন্তাভাবনার কথন অগ্রসর হচ্ছে, সেদিকে মনোনিবেশ করেই আমাদের গবেষণার অগ্রগতি হয়েছে। কোনও ব্যক্তি যখন নতুন কিছু চিন্তা শুরু করেন, নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা তা অনুধাবন করতে পারি৷”