কলকাতা: রাজ্যে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ বা টেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জারি রয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেন টেটকে কেন্দ্র করে অশান্তি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি টেট পরীক্ষার আয়োজন করেছিল রাজ্য। সেই ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছে মেধাতালিকাও। কিন্তু তাতেও সমস্যার বিশেষ সুরাহা হয়নি।
প্রাথমিক টেটের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে জনস্বার্থ মামলা, এদিন এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। বৃহস্পতিবার কয়েকশো পরীক্ষার্থী টেট পরীক্ষার প্রকাশিত মেধাতালিকার বিরোধিতা করে দ্বারস্থ হয়েছেন উচ্চ আদালতের। তাঁদের অভিযোগ এই মেধাতালিকা স্বচ্ছ নয়। পরীক্ষা নেওয়ার পর এত কম সময়ের মধ্যেই কীভাবে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হল তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। বলা হয়েছে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিয়োগের বেশ কয়েকটি ধাপ শেষ করে ফেলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
শুধু কলকাতাই নয়, টেট নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এদিন অশান্তির সাক্ষী থেকেছে জেলাও। বালুরঘাটেও আশান্তি তৈরি হয়৷ জলপাইগুড়িতে টানা ৭ ঘণ্টা পথ অবরোধের পর দিন শেষে শহরের প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের দরজায় তালাও ঝুলিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, মেধাতালিকা প্রকাশের পর শহরে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল প্রায় ৬০০ জনকে, কিন্তু বেলার দিকে ২০০ জনের কাউন্সেলিংয়ের পরেই বাকিদের ফেরত পাঠানো হয়। ফলে শুরু হয় তুমুল অশান্তি। টেট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন চাকরিপ্রার্থীরা।
অশান্তির পারদ চড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সেখানেও নির্দিষ্ট সংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর কাউন্সেলিংয়ের পর প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সন্ধে নাগাদ সংসদ থেকে জানানো হয়, পরবর্তী কাউন্সেলিংয়ের দিন ইমেল অথবা মেসেজে জানানো হবে। এহেন হয়রানি মুখ বুজে মেনে নেননি টেট উত্তীর্ণরা। জেলায় তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। সব মিলিয়ে ভোটের আগে টেট নিয়ে দিকে দিকে এই অশান্তি নিঃসন্দেহে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে সরকারের কপালে।