কাবুল: আফগানিস্তানের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত হেরাত প্রদেশ৷ যেখানে আজও সংঘাত আর ধর্মীয় বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে অতিবাহিত হয় মানুষের জীবন৷ সেই হেরাত প্রদেশেরই একদল ছাত্রী কম খরচে, হালকা ওজনের ভেন্টিলেটর বানিয়ে তাক লাগাল বিশ্বকে৷
হেরাত শহরের উচ্চবিদ্যালয়ের ১৮ বছরের পড়ুয়া সোমায়া ফারুকি তাঁর ছয় সঙ্গীকে নিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন এই বিস্ময়কর ভেন্টিলেটরটি৷ নিজেদের তৈরি রোবোটের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে ‘দ্য অল ফিমেল আফগান রোবটিক টিম’৷ গত মার্চ থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে থাবা বসায় করোনা৷ এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ওপেন সোর্সের ভিত্তিতে কম দামের ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ শুরু করেন তাঁরা৷ প্রায় চার মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই ভেন্টিলেটরটি তৈরি করে ফেলেন সাত পড়ুয়া৷ এটি কিছুটা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির নকশার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে৷
সর্বোপরি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের গাইডেন্সে এই ভেন্টিলেটরটি তৈরি করেছে টিম সোমায়া৷ এই ডিভাইসটি সহজেই বহন করা যায়৷ ব্যটারির সাহায্যে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত চালানো যাবে এই ভেন্টিলেটর৷ এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৭০০ মার্কিন ডলার৷ বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যে ভেন্টিলেটরগুলি রয়েছে তার দাম প্রায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার৷ সেই তুলনায় এটি অনেকটাই সস্তা৷
সোমায়া ফারুকি বলেন, ‘‘চিকিৎসাক্ষেত্রে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ সফল। দেশের মানুষকে সেবা দিতে পারব, এটা ভেবেই আমরা খুব আনন্দিত৷ কয়েক মাসের কঠোর পরিশ্রমের পর আমরা এই সফলতা অর্জন করতে পেরেছি৷’’
এই ভেন্টিলেটরটি ব্যবহারের আগে চূড়ান্ত পর্যায়ে পরীক্ষি নিরীক্ষা চলছে৷ এর কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য বিভাগ৷ যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল খুবই সঙ্গীন৷ তার উপর করোনাসংক্রমণে নাস্তানাবুদ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা৷ আফগানিস্তানজুড়ে রয়েছে মাত্র ৮০০টি ভেন্টিলেটর৷ এই অবস্থায় সোমায়াদের তৈরি ভেন্টেলেটরকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ সোমায়ার প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশের কর্তারা৷