তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা অস্বীকার রুজিরার, সহযোগিতার দাবি অভিষেকের

তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা অস্বীকার রুজিরার, সহযোগিতার দাবি অভিষেকের

কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে আজ জেরা করে সিবিআই৷ মঙ্গলবার হরিশ মুখার্জী রোডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন ‘শান্তিনিকেতন’-এ প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ধরে রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই আধিকারিকরা৷ এদিন রুজিরাকে ব্যাংককের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর৷ অন্যদিকে অভিষেক-রুজিরার দাবি, সিবিআইএর সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হয়েছে৷ ভালো ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব৷ 

আরও পড়ুন-  রাকেশকে বাঁচাতে গোটা পুলিশ বাহিনীকে কার্যত রুখে দিলেন ‘বাপ কা বেটা’!

আজ সকালে কয়লাকাণ্ডের তদন্তে সিবিআই জেরার মুখে পড়েন অভিষেক পত্নী৷ রেকর্ড করা হয় তাঁর বয়ান৷ এদিন ব্যাঙ্ককের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে রুজিরা বলেন, ‘‘তাইল্যান্ডের ওই অ্যাকাউন্ট আমার নয়৷ আমি কিছু জানি না৷’’ সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্ককের দুটি ব্যাঙ্কে রুজিরা নুরুলার নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷ এমনকী এদিন ওই দুই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাস বইয়ের প্রথম পাতার জেরক্স কপিও রুজিরার সামনে রাখে সিবিআই৷ জানা গিয়েছে, ওই জেরক্স কপি ২ মিনিট ধরে দেখার পর তার ছবি তুলে রাখতে চান রুজিরা৷ কিন্তু তাঁকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ এর পরেই রুজিরা জানান, এই দুটি অ্যাকাউন্ট তার নয়৷

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুটি ব্যাঙ্কে চিঠি পাঠিয়ে যাবতীয় তথ্য চাওয়া হবে৷ এ বিষয়ে বিদেশ দফতরের সঙ্গেও কথা বলছেন সিবিআই গোয়েন্দারা৷ এবং আজকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব নিয়ে তারা একেবারেই খুশি নয় বলে জানিয়েছে সিবিআই৷   

এদিকে এদিন সিবিআই পৌঁছনোর কয়েক মিনিট আগে আচমকাই অভিষেকের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে ৯ মিনিট ছিলেন তিনি৷ তার পরেই অভিষেকের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বেরিয়ে যান৷ তার ঠিক ৩ মিনিট পরেই শান্তিনিকেতনে পৌঁছন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা৷ 

এ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘হয় সিবিআই-কে ধমকানোর জন্য, নয়তো তদন্তকে প্রভাবিত করার জন্য বা কিছু লুকনোর জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যেখানে গন্ডোগোল, যেখানে ভ্রষ্টাচার সেখানেই দিদিমণি পৌঁছে যান, সেটাকে আড়াল করার জন্য৷’’ দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘‘এখনও অনেক চিঠি পাওয়া বাকি রয়েছে৷ অনেক জায়গায় হানা তল্লাশি করা হয়েছে৷ অনেক তথ্য হাতে এসেছে৷ বাংলার মানুষ চাইছে, যে ভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে, লুঠ চলছে সেটা সকলের সামনে আসুক৷ দোষীরা সাজা পাক৷’’

আরও পড়ুন- বাম সংস্কৃতিতে কালি লাগালো ‘টুম্পা’? মতানৈক্য দলের অন্দরেই

 
এর পাল্টা জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অত্যন্ত স্বচ্ছ ভাবে সাহসিকতার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন৷ নিজে টুইট করে নোটিশের কথা জানিয়েছেন৷ এই পরিস্থিতিতে কেউ অতি সক্রিয়, কেউ নিষ্ক্রীয়, কেউ আবার দল বদল করছে৷ যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, এফআইআর রয়েছে সেই মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তো ওঁনারা বিজেপি’তে নিয়ে নিয়েছেন৷ তাঁরা তো ভয়ে, বাঁচতে শিবির বদল করেছে৷ তাঁদের কাছে কেন সিবিআই যাচ্ছে না? যাঁরা বিজেপি’র কাছে মাথা নত করছে না, তাঁদের ক্ষেত্রে যত তৎপরতা৷ অভিষেকের দিকে আঙুল তোলা বিজেপি’র মানায় না৷’’     

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 8 =