মাদককাণ্ডে নয়া মোড়, পুলিশের নজরে রাকেশের ছায়াসঙ্গী জীতেন্দ্র!

মাদককাণ্ডে নয়া মোড়, পুলিশের নজরে রাকেশের ছায়াসঙ্গী জীতেন্দ্র!

a53108a6c1e2e91308e20bb31cb372fc

কলকাতা: মাদককাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী সরাসরি আঙুল তুলেছিলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে। তাঁর গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে সিআইডি তদন্তের আজি জানিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রেক্ষিতেই লালবাজারে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে। যদিও তার আগে রাকেশের বাড়িতে পৌঁছে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। দীর্ঘ ২ ঘণ্টা পর তাঁর বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ৷ বিজেপি নেতার বাড়িতে নারকটিক্স সেলের তল্লাশি চলে৷ তল্লাশি শেষ হতেই গ্রেফতার করা হয় রাকেশ সিং ও তাঁর ছায়াসঙ্গী জীতেন্দ্র৷ বর্ধমানের গলসি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ একই সঙ্গে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাকেশ সিংহের দুই ছেলেকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ৷ পরে রাকেশের দুই ছেলেকেও গ্রেফতার করে পুলিশ৷ কোন ধারায় রাকেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বিস্তারিত জানিয়ে পরিবারকে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ৷ কিন্তু, রাকেশ গ্রেফতার হলেও মাদককাণ্ডের আরও বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্রকারীর দিকে নজর দিতে চলেছে পুলিশ৷

নিউ আলিপুর মাদক মামলায় ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে রাকেশের নাম উঠে এলেও অপরাধ সংগঠনের ক্ষেত্রে জীতেন্দ্রর ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছে লালবাজার৷ জীতেন্দ্র কুমার সিং৷ বয়স ২৬৷ বিহারের এই যুবক রাকেশ সিংয়ের হাত ধরে কলকাতায় আসে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ৷ ২১ নম্বর অরফানগঞ্জ রোডে একটি ছোট্ট বাড়িতে থাকতে শুরু করে সে৷ রাকেশ সিং যখন আইএনটিইউসি নেতা, তখন চিড়িয়াখানায় অস্থায়ী কর্মী হিসেবে জীতেন্দ্রকে কাজ পাইয়ে দেন রাকেশ সিং৷ এরপর আস্তে আস্তে রাকেশের ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠে জীতেন্দ্র৷ দু’বছর আগে খিদিরপুরে বাড়ি কেনে জীতেন্দ্র৷ এবার পুলিশের নজরে যুবকের ভূমিকা৷

মাদককাণ্ডে কলকাতা পুলিশের হাজিরার প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাকেশ সিং হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন৷ তাঁর আবেদন ছিল হাজিরার নির্দেশে যেন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। তবে সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে কার্যত পুলিশের পক্ষে রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে হাজিরার নির্ধারিত সময়ের আগেই এদিন তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী৷ যদিও বাড়ির ভেতর ঢুকতে পারেনি পুলিশ৷ বচসার পরিবেশ তৈরি হয় বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের ছেলে এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে। অভিযোগ করা হয়, পুলিশ কি কারণে তল্লাশিতে এসেছে তার কোন বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। তবে অবশেষে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা পর বিজেপি নেতার বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু করে তদন্তকারীরা।

d797898a45a589e2ce31c7538970c761

তাদের মূল বক্তব্য, এই ধরনের অভিযান চালানোর জন্য বৈধ নথির দরকার পড়ে না। এই ধরনের ঘটনায় এই ভাবেই তল্লাশি অভিযান চালানো যায়। রাকেশের বাড়িতে ৩ ঘণ্টা ধরে ৬টি ঘরে তল্লাশির পর গলসি থেকে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেস থেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো রাকেশ সিং৷ গলসি থেকে আজই তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে৷ রাকেশ যে কলকাতা নেই, তা আগেই জানতে পেরেছিল পুলিশ৷ সেই মতো জেলায় জেলায় বার্তা পাঠানো হয় কলকাতা পুলিশের তরফে৷ পরে গলসির হাইওয়েতে নাকাচেকিংয়ের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ অভিযুক্ত নেতার সন্ধান পায় পুলিশ৷ পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ধরে রাকেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷  

পামেলা গোস্বামী বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন বিজেপিরই কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে! বলেছেন, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাকেশ সিং যে এই ঘটনায় অভিযুক্ত তার জন্য তাঁর কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এদিকে পামেলা গোস্বামী প্রসঙ্গে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের আলোচনায় যোগ দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট দেখিয়ে তিনি দাবি করেছেন, গ্রেফতার হওয়ার আগে পামেলা গোস্বামী সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *