নিউ ইয়র্ক: মানব দেহ ছাড়িয়ে মারণ করোনাভাইরাস থাবা বসাল সারমেয়র শরীরেরও৷ এবার নিউ ইয়র্কে করোনা আক্রান্ত জার্মান শেফার্ড পোষ্য কুকুরের প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যু দিল মার্কিন প্রশাসন৷
জানা গিয়েছে, আমেরিকায় প্রথম কোনও করোনা আক্রান্ত পোষ্য জার্মান শেপার্ড বাডিকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে স্বেচ্ছামৃত্যু দেওয়া হয়েছে৷ গত জুন মাসে আমেরিকার একাধিক সংস্থা জানিয়েছিল, বাডিই প্রথম করোনা আক্রান্ত পোষ্য৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বাডির করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে তার মালিক রবার্ট মাহোনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন৷ আক্রান্ত গোটা পরিবার৷ মালিকের থেকে ওই পোষ্য আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ৷
জানা গিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ রবার্টের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সময়ে বার্ডির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়৷ গত কয়েক সপ্তাহ জার্মান শেপার্ডটি তীব্র যন্ত্রণায় কাতর ছিল৷ দীর্ঘ চিকিৎসায় পরিস্থিতি উন্নত না হওয়ায় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন পরিবার ও চিকিৎসকরা৷ চোখের সামনে প্রিয় পোষ্যের যন্ত্রণা দেখতে পারেননি মালিক রবার্ট মাহোনি৷ তিনিও করোনা আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন বেশ কয়েকদিন ধরে৷ পরে, বাধ্য হয়ে পোষ্য কুকুরের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সম্মতি দেয় মার্কিন প্রশাসন৷
সারমেয়টির স্বেচ্ছামৃত্যুর পর তার মালিক রবার্ট মাহোনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-কে জানান, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাদের পোষ্য বাডি’র৷ এর আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন রবার্ট৷ বেশ কয়েক সপ্তাহ কোভিড-১৯ এ ভুগেছিলেন তিনি৷ তার পরই বাডি’র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়৷ মে মাসে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার হয় বাডিকে৷ চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন কোভিড আক্রান্ত হয়েছে তাদের পোষ্য৷ গত জুন মাসে মার্কিন কৃষি দফতরের রিপোর্টে জানানো হয়, নিউ ইয়র্কের একটি জার্মান শেফার্ড করোনা আক্রান্ত হয়েছে৷ এই শেফার্ডটিই দেশের প্রথম করোনা আক্রান্ত সারমেয়৷ সেই সময় অবশ্য তার মালিকের নাম উল্লেখ করা হয়নি৷শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় দ্রুত অবস্থার অবনতি হচ্ছিল বাডি’র৷ বুকে পুরোপুরি শ্লেষ্মা জমে গিয়েছিল তার৷ ১১ জুলাই বমি শুরু হয় শেফার্ডটির৷ সঙ্গে চাক চাক রক্ত বেরতে থাকে৷ তবে করোনার জন্যই বাডির এই পরিস্থিতি কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন মাহোনি পরিবার৷
নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র জানান, জার্মান শেফার্ডের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ কিন্তু পশুচিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করার আগেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়৷ তবে পশুর শরীর থেকে এই ভাইরাসের মানব দেহে ছড়াচ্ছে কিনা, তার কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই৷ তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মানুষের শরীর থেকে পশুর শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে জানিয়েছে ইউএসডিএ৷