মস্কো: লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ৷ করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে জেরবার গোটা বিশ্ব৷ গোটা বিশ্ব এতদিন অপেক্ষায় ছিল, কবে ভ্যাকসিন বাজারে আসবে৷ এবার গোটা বিশ্বের সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কাটিয়ে বিশ্বে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি জানালো রাশিয়া৷ তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি৷ এত কম সময়ে সাফল্যের দাবি ঘিরেও সংশয়ে রয়েছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ৷ এত কম সময়ে কীভাবে টিকা তৈরি করল রাশিয়া? প্রশ্ন তুলেছে আমেরিকাও৷
করোনা আবহে বড়সড় সুখবর শোনাল রাশিয়া৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের কন্যার দেহে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে রাশিয়া সরকার৷ টিকা প্রয়োগের পুতিন কন্যা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এফপি৷ করোনা টিকা আবিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে রাশিয়ার তরফে৷ ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের অনুমতি দিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য দফতর৷ প্রথম ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র মেলায় আশার আলো দেখছে গোটা বিশ্ব৷ আগামী সপ্তাহ থেকে এই ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসবে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ এই ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকরী দাবি করেছে রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর৷ খুব দ্রুত জনসাধারণের জন্য এই ভ্যাকসিন বাজারে আনা হবে বলে দাবি করেছেন রাষ্ট্রপতি পুতিন৷ গত ১৮ জুন এই ভ্যাকসিনের মানব দেহে প্রয়োগ সফল হয়েছিল৷ আজ রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক করোনা ভ্যাকসিনের সরকারি ভাবে ছাড়পত্র দিয়েছে৷
রাশিয়ার উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলেগ গ্রিডনেভ জানিয়ে দিলেন, প্রথম করোনার প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী হিসেবে নাম নথিভুক্ত করেছে রাশিয়া। সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়ে যাবে গণহারে টিকাকরণ৷ গামালিয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে৷ নস্টিটিউট ফর ট্রান্সল্যাশনাল মেডিসিন অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির ডিরেক্টর ভাদিম তারাসোভ জানিয়েছেন, দু’টি ধাপে মানব দেহে এই টিকা প্রয়োগ করা হয়৷ প্রথম যে দলটির উপরে পরীক্ষামূলক ভাবে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের দেহে কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ তাঁদের ছুটিও দেওয়া হয়েছে৷ দ্বিতীয় দলটি ছাড়া পেয়েছে ২০ জুলাই৷ এই টিকার প্রয়োগে ইতিবাচক ফল মিলেছে৷ একইসঙ্গে এটি নিরাপদও৷ তারাসোভ জানান, গত ১৮ জুন প্রথম এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছিল৷
তবে এত তাড়াতাড়ি করোনা প্রতিষেধক সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়া ঘিরে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। ফার্স্টপোস্টের খরব অনুসারে, এই মাত্র কয়েক দিন আগে, ১৩ জুলাই প্রথম খবর আসে, রাশিয়া তাদের গামালিয়ার ভ্যাকসিনের দুটি ভাগে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল। আর এক মাস যেতে না যেতেই ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন হবে বলে দাবি করা হচ্ছে৷ এদিকে এখনও পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও কোনো ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়নি৷ সংস্থার মতে তাদের ভ্যাকসিনগুলি ভালো কাজ করছে৷ কিন্তু কোন ভ্যাকসিন কাজ করছে আর এটি সমস্ত পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্বগুলি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে, এই দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা৷ এই টিকা নিয়ে রাশিয়াকে আগেই সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ সঠিক পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ রয়েছে বলেও জানানো হয়৷ কেননা, টিকা প্রস্তুত করতে গেলে বহু পর্যয় ও দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হয়৷ সেক্ষেত্রে কম সময়ের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ৷