রিসার্চ ক্যাম্পের দুর্ঘটনা, বিশ্বখ্যাত জলবায়ু বিজ্ঞানী মৃত্যু

 সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর ফরেস্ট, স্নো অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ রিসার্চ-এর পরিচালক স্টিফেন ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন, আর্টিক এবং অ্যান্টার্কটিকের উপর এর প্রভাবগুলির ওপর আলোকপাত করে।   গ্রিনল্যান্ডে তাঁর কয়েক দশকের দীর্ঘ গবেষণা বিশেষভাবে নিশ্চিত করেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রিনল্যান্ডের বরফের আচ্ছাদন খুব দ্রুত গতিতে গলে যাচ্ছে যা ক্রমেই বাড়ছে।

 ওয়াশিংটন: শনিবার গ্রিনল্যান্ডে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বিশ্বখ্যাত জলবায়ু বিজ্ঞানী কনরাড স্টেফেনের(৬৮)। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুইট ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর ফরেস্ট, স্নো অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ রিসার্চ-এর পরিচালক স্টিফেন ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন, আর্টিক এবং অ্যান্টার্কটিকের উপর এর প্রভাবগুলির ওপর আলোকপাত করে।   গ্রিনল্যান্ডে তাঁর কয়েক দশকের দীর্ঘ গবেষণা বিশেষভাবে নিশ্চিত করেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রিনল্যান্ডের বরফের আচ্ছাদন খুব দ্রুত গতিতে গলে যাচ্ছে যা ক্রমেই বাড়ছে।

৩০ বছর আগে গ্রিনল্যান্ডে তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত   গবেষণা কেন্দ্র “সুইস ক্যাম্প”এর কাছেই এদিন দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। টাইমস অনুসারে স্টিফেন একটি হিমবাহের ফাটলে পড়ে গিয়ে তার গভীর জলে ডুবে গিয়েছিলেন। সুইস ক্যাম্পের গবেষকরা টাইমসকে জানিয়েছেন যে এই হিমবাহের এই ফাটলগু বিপজ্জনক হিসাবে পরিচিত তবে প্রচন্ড হাওয়া এবং সাম্প্রতিক তুষারপাতের ফলে এগুলি ভালোভাবে খেয়াল করা যাচ্ছিল না।

ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী রায়ান আর নীলি, যিনি স্টেফেনের অধীনেই পড়াশোনা করেছেন, টাইমসকে জানিয়েছেন যে সেই অঞ্চলে হিমবাহের ফাটল সেই অর্থে কখনোই দেখা যেত না  কিন্তু উষ্ণায়নের ফলে বরফের আচ্ছাদনে চাপ সৃষ্টি হয় এবং এর ফলেই ফাটলগুলি সৃষ্টি হয়েছিল।  তিনি বলেন, “দেখে মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন আসলে তাকেই শিকার মনে করছে।”

দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট অনুসারে, স্টিফেন জলবায়ু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রভাব ফেলেছিলেন এবং প্রায়শই তিনি তাঁর জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত গবেষণাগুলি রাজনৈতিক নেতা ও জনগণের সামনে তুলে ধরতেন। অস্থায়ী একটি ল্যাব ঘর এবং সবার খাওয়া দাওয়ার ঘর সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রতি বসন্তে ক্যাম্পে ফিরে যেতেন। কখনও কখনও ক্যাম্পটি ধসেও পড়ত এবং ফের তৈরি হয়ে যেত। কারণ স্টিফেন প্রায়শই এর বেশিরভাগ অংশ নিজেই তৈরি করতেন।  সেখানে থাকাকালীন, তিনি শুধু রাতে তিন থেকে চার ঘন্টা ঘুমাতেন এবং সাধারণত প্রচণ্ড শীতেও খোলা হাতে কাজ করতেন।

১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্টিফেন এবং ১৯৮৪ সালে সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। অরণ্য, তুষার ও ল্যান্ডস্কেপ গবেষণার জন্য সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট এর ডাইরেক্টর পদে আসার আগে ১৯৯০ সালে তিনি বোল্ডারের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোতে জলবায়ু বিভাগের অধ্যাপক হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোপারেটিভ ইনস্টিটিউট ফর নেচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স (সিআইআরইএস)এর পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ২০০৫ থেকে ২০১২ পর্যন্ত। ২০১২ সালে একইসঙ্গে, তিনি ইটিএইচ জুরিখ এবং সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, লাউসনেও অধ্যাপনার কাজ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =