বালি: নতুন প্রজন্মের যে হাতগুলি ধরে ৭ শতাংশ ভোটের লজ্জা কাটিয়ে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে বামফ্রন্ট, সেই হাতগুলির অন্যতম একটি হাত দীপ্সিতা ধর। হাওড়া বালি থেকে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআইএমের প্রার্থী হয়েছেন এই প্রাক্তন জেএনইউ-এর ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। তবে এই প্রথমবার সরাসরি ভোটের ময়দানে নামছেন দীপ্সিতা। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলত্যাগী বিদায়ী বিধায়ক বিজেপির প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া। লড়াই সহজ হবে না। তাই নিজের বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে জোর প্রচারে ব্যস্ত দীপ্সিতা। শনিবার তার সঙ্গ দিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলার মানুষের অভিযোগ ছিল, বামফ্রন্টে পাকা চুলের ভিড় বড্ড বেশি বেড়ে চলেছে। তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সব হিসেব পাল্টে দিয়ে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সামনের সারিতে এগিয়ে এসেছে একঝাঁক তরুণ প্রজন্ম। তার মধ্যেই একজন বালির প্রার্থী দীপ্সিতা। প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম দেখার পর থেকেই নিজের কেন্দ্র প্রায় প্রতিদিনই চষে ফেলছেন তিনি। শনিবার তার হয়ে প্রচারে নামলেন অভিনেতা শ্রীলেখা মিত্রও। টলিউডের যে কয়েকজন তারকা এখনও নিজের শিরদাঁড়া বিকিয়ে দেননি তাদের মধ্যে শ্রীলেখা একজন। প্রথম থেকেই লাল ঝাণ্ডার প্রতি তার ভালোবাসা দেখিয়ে এসেছেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার রুপোলি পর্দার বন্ধুবান্ধবদের এদল-ওদল করা নিয়ে তুমুল কটাক্ষও করেছেন তিনি।
শনিবার ‘হাল্লা বোল’ স্লোগান দিয়ে বালি বিধানসভা কেন্দ্রের বাদামতলা এলাকায় টোটোয় চড়ে ও পায়ে হেঁটে জোর প্রচার করলেন শ্রীলেখা ও দীপ্সিতা। শ্রীলেখা বললেন, “দীপ্সিতার মত তরুণ প্রজন্মের মানুষরাই পারবে রাজ্যের হাল ফেরাতে। কারণ তাদের শিরদাঁড়া এখনও সোজা। সাধারণ মানুষ এতদিনে বুঝে গিয়েছে যে তাদের সঙ্গে বিশাল বড় একটা গিমিক আর ভাঁওতাবাজি চলছে।” তিনি আরও বললেন,” আমি অভিনেত্রী, তারকা নই। আমার মত অনেকেই আছেন যারা এখনও টাকার লোভে বিকিয়ে যাননি। আমাকেও টাকার লোভ দেখানো হয়েছিল। কিন্তু আমি আছি, থাকবো। বিক্রি বা দলবদলু হব না।”
জোড়াফুল ও পদ্মফুলকে একসঙ্গে কটাক্ষ করে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, “ফুল তো মরশুমে একবারই আসছ, কাস্তে-হাতুড়ি সারাবছর থাকে। আমি আশাবাদী যে রাজ্যের হাল ফেরাতে এবার মানুষ সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদেরই ভোট দেবেন।” শ্রীলেখার মতই দীপ্সিতার জয় নিয়ে আশাবাদী বাম শিবিরও। গত পাঁচ বছরে বালির কোনও উন্নয়নের চেষ্টা করেননি বৈশালী ডালমিয়া। তৃণমূল ছেড়ে এবার তিনি বিজেপিতে। তাই বালির সাধারণ মানুষ তার উপর আরও ক্ষুদ্ধ। এদিকে তৃণমূলের উপরেও আস্থা নেই মানুষের। সুতরাং হাল ফেরাতে লাল’ই একমাত্র বিকল্প।