পটাশপুর: বছর খানেক আগেও জাতীয় রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন তিনি, নিজের লোকসভা কেন্দ্র থেকে হেরে গেলেও সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমারকে নিয়ে চর্চা থামেনি, থামেনি শাসকের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষুরধার বক্তৃতা। কিন্তু করোনা অতিমারীর দেশ জোড়া সংকটের মাঝে আচমকাই যেন মিইয়ে যান তরুণ বামপন্থী এই নেতা। দীর্ঘদিনের নীরবতার পর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে ফের মুখ খুললেন কানহাইয়া কুমার।
কেন্দ্রে শাসনাধীন বিজেপি আর রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে সংযুক্ত মোর্চার সমর্থনে প্রচার চালাতে গতকাল পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে দলীয় জনসভায় যোগ দেন কানহাইয়া কুমার। সেখান থেকেই দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন ছাত্রনেতা আক্রমণ শানান বাংলার দলবদলের রাজনীতির বিরুদ্ধে। তীব্র কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “আগে যাদের ছবি দিদির পাশে দেখা যেত এখন তাঁদের ছবি মোদির সঙ্গে দেখা যায়। আসলে পুরনো বিষ নতুন বোতলে এসেছে।”
এখানেই শেষ নয়, চেনা ভঙ্গিতে এদিন ভোটের আগে বিপুল অর্থ খরচ করে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারকেও বিঁধেছেন কানহাইয়া কুমার। উপস্থিত জনগণকে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, এদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় কোনো রাজা রাণী নেই, আর তাই ভোট দেওয়ার অধিকার সকলেরই আছে। “আপনি গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে গোপনে যে ভোটটি দিচ্ছেন, কিছু লোক আগে থেকেই তার পরিণাম জেনে বসে আছে। আগে থেকে জানেন তো এত লাখ লাখ টাকা প্রচারের পিছনে খরচ করছেন কেন?” প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মেদিনীপুরের মাটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম বসুর মাটি, এই মাটি থেকেই তাই আগামী দিনে বিপ্লবের সূচনা হবে, বিশ্বাস বিহারের সিপিআই নেতার। তাঁর হুংকার, “দেশকে ভাগ বাটোয়ারা করে দেওয়া শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন মেদিনীপুরের মানুষ।” কানহাইয়া কুমারের বঙ্গ রাজনীতির প্রচারে যোগদান নিঃসন্দেহে বামেদের শক্তিবৃদ্ধি করবে, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।