‘তৃণমূলের ইস্তেহার নকল করেছে বিজেপি!’, তীব্র কটাক্ষ সৌগতর

‘তৃণমূলের ইস্তেহার নকল করেছে বিজেপি!’, তীব্র কটাক্ষ সৌগতর

54bf7c4bc30a4c0b5a09d916ef9746b9

 

কলকাতা: ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে পদ্মশিবির। রবিবার দলের দুই নম্বর অধিকর্তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত ধরে প্রকাশিত হল বহু প্রতীক্ষিত ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার। বিজেপির ইশতেহার নিয়ে ইতিমধ্যেই তুমুল সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, “বিজেপি কিন্তু সব দিক থেকেই তৃণমূলকে অনুকরণ এবং অনুসরণ করছে। আমরা অনেক আগেই ২৯১ জন প্রার্থীর নাম ঘোষনা করে দিয়েছি। বিজেপি ধাপে ধাপে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে। আমরা ১৭ তারিখ ইশতেহার প্রকাশ করেছি, বিজেপি ২১ তারিখ নিজেদের ইশতেহার প্রকাশ করল। আবার খুব ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে, ওই ইশতেহারে অনেক বিষয়ই তৃণমূলের উপর নির্ভর করছে।”

নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে বিজেপি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “৭০ বছর আগে শরণার্থী হয়ে বাংলায় আসা মানুষ আজ পর্যন্ত নাগরিকত্ব না থাকার জন্য দুঃখ পান। বাংলায় সরকার গড়লে, প্রথম মন্ত্রিসভাতেই সিএএ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং প্রত্যেক শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “প্রত্যেক শরণার্থী পরিবারকে পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছরে ১০ হাজার টাকা অনুদান তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।” ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারের এই প্রতিশ্রুতিকে তীব্র কটাক্ষ করে সৌগত দাবি করেছেন, “বিজেপির ইশতেহারে যা যা রয়েছে সবই শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি। মনে রাখবেন অসমে ওরা এনআরসি করেছিল, যাতে ১৭ লক্ষ হিন্দু বাঙালি বাদ পড়েছিল। নাগরিকত্ব দেওয়া তো দূরের কথা, ১৭ লক্ষ হিন্দু বাঙালি দেশবাসীকে ওরা ডিটেনশন ক্যাম্পের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।”

বিজেপি তাদের সংকল্প পত্রে বাংলার মহিলাদের মন জয় করতে বিশেষ নজর দিয়েছে। বাংলার মহিলাদের জন্য একাধিক সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পদ্ম শিবির। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতিকে হেলায় উড়িয়ে দিয়ে সৌগত বলেছেন, “ওরা মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর জোর দিয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি উত্তরপ্রদেশ ও অসমের পরিস্থিতি দেখেন তাহলে খেয়াল করবেন, অসমে এখন মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে।” সাম্প্রতিক অতীতের হাথরস এবং উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তৃণমূল নেতা সৌগত রায়ের প্রশ্ন, “পরিবহন ক্ষেত্রে মেয়েদের কোনও খরচ লাগবে না। মেয়েদের জন্য এই সুবিধা উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, কর্নাটকে নেই কেন? কেন শুধুমাত্র বাংলাতে হবে?”

ইশতেহারের অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন খোলার কথা বলেছেন অমিত শাহ, যেখানে ৫ টাকায় মিলবে ভাত। এই প্রতিশ্রুতির তীব্র নিন্দা করে সৌগত রায়ের বক্তব্য, “অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন তৈরি করবে যেখানে ৫ টাকায় ভাত পাওয়া যাবে! এ তো তৃণমূলের অনুকরণ! তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই মা ক্যান্টিন শুরু করেছে বিভিন্ন শহরে। সুতরাং এই অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন হাস্যকর। আমরা বিজেপির ইশতেহারে এই বিষয়টির ঘোরতর নিন্দা করছি।”

তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা এদিন আরও বলেন, “ওরা সোনার বাংলা করার দাবি করছে। কিন্তু কীভাবে? সোনার বাংলা কি বহিরাগত লোকের হাত ধরে হবে? বাংলার জন্য ইশতেহার প্রকাশ করল একজন গুজরাটের লোক। তার পাশে দাঁড়িয়েছিল একজন মধ্যপ্রদেশের লোক। বিজেপির যে বাঙালি নেতা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিনি কিছুই বলতে পারলেন না। এটাই বিজেপির অবস্থা। ইশতেহার প্রকাশ করতে গেলেও বাইরে থেকে লোক আনতে হয়। আমরা এর আগেও দেখেছি প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বারবার রাজ্যের বিজেপি নেতারা দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ছুটে গিয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *