আমেরিকা: ফের একবার শেতাঙ্গ বিপ্লবে গর্জে উঠল আমেরিকা। তিন সন্তানের সামনে জ্যাকব ব্লেক নামের এক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করার ঘটনায় শয়ে শয়ে মানুষ বিক্ষোভ দেখালেন আমেরিকায়। একাধিক ট্রাক জ্বলল নিমেষে। সরকারি ভবনে ঢিল মেরে জানলার কাঁচ ভেঙে দেওয়া হল। পুলিশের সঙ্গেও একপ্রস্থ লড়াই বেঁধেছিল বিক্ষোভকারীদের। আরও একবার রাস্তায় একাধিক জায়গায় আগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থাকল মার্কিনবাসী। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগের মতোই কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
ঘটনাটি ঘটেছে উইসকনসিনয়ের কেশোয়ায়। ২০২০ বর্ষে থেকেও কীভাবে এই বর্ণবিদ্বেষ মানুষ বিশ্বাস করেন, এটাই ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। সামনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আমেরিকায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেতাঙ্গ ভোট পেতে মরিয়া। তাই আমেরিকায় তীব্র বর্ণবিদ্বেষ ও মেরুকরণের রাজনীতি ছড়িয়ে দেওয়াই তাঁর মূল লক্ষ্য। অন্যদিকে, বাবাকে রক্তাত্ব অবস্থায় লুটিয়ে পড়তে দেখে ট্রমার মধ্যে রয়েছে জেকবের তিন শিশু সন্তান। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই বিক্ষোভ শুরু হয় আমেরিকায়। 'জাস্টিস ফর জেকব', 'নো জাস্টিস, নো পিস', ইত্যাদি একাধিক স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা।
ডেমোক্র্যাট গভর্নর টনি এভার্স কর্তৃক কারফিউ জারি করা হলেও বিক্ষোভ থেমে থাকেনি। প্রতিবাদকারীরা সাফ জানিয়েদেন তারা রাস্তা থেকে সরবেন না। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি করা উইসকনসিন শহরে। হাজারে হাজারে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের ওপর ইট বৃষ্টিও করেন তারা। জানা গেছে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেকব হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ওই শহরের ৬৭ শতাংশ মানুষ শেতাঙ্গ। মাত্র ১১ শতাংশ মানুষ সেখানে কৃষ্ণাঙ্গ এবং ১৭.৬ শতাংশ মানুষ হিসপানিক। শেতাঙ্গ বাদে প্রত্যেকেই আর্থিক ভাবে দারিদ্র কাঁটার নিচে অবস্থান করে। ওই শহরের মেয়র ও পুলিশ প্রধানও শেতাঙ্গ ফলে ন্যায় বিচারের যে কোনও সম্ভাবনা এখনও নেই তা স্পষ্ট।
শোনা গেছে, জেকবকে গুলি করার সময় ৭টি গুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। জেকবের শরীরে কটা গুলি লেগেছে সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায়নি। এর আগেও এক ভিডিওতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশের নৃসংশতার শিকার হতে দেখা গেছে। ওই ভিডিও পুলিশ আধিকারিক ডেরেক শভিন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জের গলায় নিজের হাঁটু দিয়ে চাপ দিতে থাকেন। জর্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সে জালিয়াতি করেছে। রাস্তায় শুইয়ে দিয়ে গলায় অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার ফলে দম বন্ধ হয়ে আসছিল জর্জের। অফিসার তবুও তাঁর আক্রোশ মেটাতে পারেনি। অবশেষে ওখানেই মারা যান জর্জ। এই ঘটনার বিরুদ্ধে গোটা আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ শ্রেণি বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন৷