আর নয় খাঁচা বন্দি জীবন! পশুপাখি কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি হাইকোর্টের

এ ব্যাপারে প্রশাসনকেও কড়া হতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত

কলকাতা: বন্যেরা বনে সুন্দর, আর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। বাংলা সাহিত্যে প্রচলিত এই উপদেশমূলক বাক্যটি আজকের যুগেও মেনে চলেন না অনেকেই। পশু কিংবা পাখির সঙ্গে আত্মিক যোগ তৈরির অছিলায়, কিংবা শুধুমাত্র নিজেদের আমোদের প্রয়োজনে মুক্ত প্রাণকে খাঁচায় আবদ্ধ করে রাখেন মানুষ। খাঁচার পাখির পা থেকে শিকলের বেড়ি কখনো ঘোচে না, মোছে না পোষ্যের গলা থেকে দড়ির দাগ। তবু মানুষ আধুনিক, মানুষ বুদ্ধিমান, প্রাণীজগতে ক্ষমতার রশি তাই মানুষেরই হাতে। আর বারেবারে মানুষের খেয়ালের বশে বন্দী হতে হয় পশুপাখিকে। এবার এই প্রচলিত ধারাতেই বাঁধা দিল খোদ আদালত। 

গৃহপালিত নয়, এমন পশুপাখি কেনা রাখা এমনকি বিক্রিও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল কলকাতা হাইকোর্টে, এদিন এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। কোনো উড়ো নির্দেশিকা নয়, কিংবা খাতায় কলমে সীমাবদ্ধ কোনো আদেশ নয়, উচ্চ আদালতের এই রায় যাতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়, সে বিষয়ে পুলিশকে নজর রাখতেও বলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। মূলত, নিষিদ্ধ পশুপাখির বিক্রি পাচার রুখতেই এই কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সড়ক, রেল কিংবা বিমানপথেও এই নিষিদ্ধ কারবার রোখার উদ্দেশ্যে তৎপর হয়ে উঠছে প্রশাসন।

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণাণের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, গৃহপালিত নয় এমন পশু কিংবা পাখি এখন থেকে আর কেনাবেচা করা যাবে না। তেমন কিছু সঙ্গে রাখলেও তা অপরাধ বলেই বিবেচিত হবে। জানা গেছে, কলকাতার গ্যালিফ স্ট্রিট, ব্যানার্জী হাট-সহ বর্ধমান বাঁকুড়া পুরুলিয়া জঙ্গলমহল প্রভৃতি এলাকার বনাঞ্চলে রমরমিয়ে চলে পশুপাখি নিয়ে নিষিদ্ধ কারবার। তা বন্ধ করতেই এবার কড়া হচ্ছে আদালত। বিমান পথেও যাতে এই পাচারকার্য না চলতে পারে তার জন্য কাস্টমস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন এ বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির পরিপ্রেক্ষিতেই এমন রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। এছাড়া, বনাঞ্চল গুলিতে পুলিশি প্রহরা বৃদ্ধি ও বনকর্মীদের আধুনিক অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার চিন্তা ভাবনাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে সূত্রের খবরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + 17 =