কলকাতা: ‘হাইভোল্টেজ’ নন্দীগ্রামে এবারের ভোট যুদ্ধ হতে চলেছে ‘ধুন্ধুমার’৷ এই কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল-বিজেপি’র হেভিওয়েট দুই প্রার্থী৷ একদিকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী৷ আর হেভিওয়েট এই প্রার্থীদের টক্কর দিতে বামেদের অস্ত্র তরুণ প্রজন্মের দূত মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়৷ তৃণমূল-বিজেপি’র জোর প্রচারের মাঝে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বিস্ফোরক দাবি করল বাম শিবির৷
আরও পড়ুন- মনোনয়ন দিতে গিয়েও ফিরলেন গেরুয়া প্রার্থী! শেষ মুহূর্তে বড় সিদ্ধান্ত বিজেপির
এদিন নন্দীগ্রামের বাম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে দলের জেলা সম্পাদক বলেন, গত ১০ বছর ধরে তৃণমূল ও বিজেপি এখানকার মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি৷ সে কারণেই শুভেন্দু অধিকারী লক্ষ লক্ষ ভোটে জিতেছেন৷ ২০১৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন৷ সে দিনও কিন্তু এখানকার মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০১১ সাল থেকেই উনি টুকে পাশ করেছেন৷ ছাপ্পা ভোট দিয়ে জয়ী হয়েছেন৷ সেই সময়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী ষড়যন্ত্র করে জিতেছিল৷ এখনও ষড়যন্ত্র করছে৷ ২০০৭ সালে থেকে মাওবাদীদের নিয়ে এসে গভীর ষড়যন্ত্র করে বামফ্রন্টকে সরানো হয়েছে৷ কিষেণজিকে ব্যবহার করা হয়েছে৷ নন্দীগ্রামে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভাজন করা হয়েছে৷ সেই বিভাজনের রাজনীতি এখনও চলছে৷’’
তাঁর কথায়, এখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই৷ পঞ্চায়েত ভোটে এই শুভেন্দু অধিকারীই বামেদের মনোনয়ন দিতে দেননি৷ পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য করতে পারলে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলা হয়েছিল৷ সেটা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল না? প্রশ্ন তাঁর৷ তিনি আরও বলেন, পঞ্চায়েতে লুঠতরাজ চলছে৷ লুঠের ভাগ নিয়ে মারামারি চলছে৷ এবারও স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক ভোট হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে৷ তাই বামেদের তরফে তিনটি দাবি করা হয়েছে৷ প্রথমত, ভোটের আগের দিন রাত্রে সমস্ত পরিবারকে সাহজ জোগাতে হবে৷ যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে৷ দ্বিতীয়ত, সমস্ত পরিবারের কাছ থেকে ভোটার কার্ড কেড়ে নেওয়ার যে রেওয়াজ রয়েছে, তা রুখতে হবে৷ এবং তৃতীয়ত, ছাপ্পা ভোট বন্ধ করতে হবে৷ আজ ডিএমের কাছে এই দাবি জানানো হবে বলেও জানায় বাম নেতৃত্ব৷ তাঁদের সাফ কথা, এই দাবি পূরণের আশ্বাস না মিললে ফের রাস্তা অবরোধ, থানা অবরোধ করা হবে৷
আরও পড়ুন- মমতার নির্বাচনী এজেন্ট সহ ৪১ জনের গ্রেফতারি চায় বিজেপি! কমিশনে চিঠি
এদিন মীনাক্ষী বলেন, ২০২১-এ নির্বাচন শুধু কোনও রাজনৈতিক দলের হার-জিত নয়৷ এবারের ভোট আগামী কয়েক প্রজন্মের ভবিষ্যতকে নির্ধারণ করবে৷ এবারের ভোট গোটা বাংলার বেকার ছাত্রযুবদের ভবিষ্যৎ, কৃষক অধিকার, ফসলের দাম, মা-বোনেদের সম্মান রক্ষার লড়াই৷ এলাকার উন্নতি, মেধার উন্নতিকে সামনে রেখেই আমারা লড়ব৷