কলকাতা: একথা ঠিক যে রাজ্যের নির্বাচনে দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল এবং বিজেপি বিপুল খরচ করছে। দুই রাজনৈতিক দলের প্রচারের আঙ্গিক দেখেই বোঝা যাচ্ছে খরচে তারা কার্পণ্য করেনি। হেলিকপ্টার থেকে সাঁজোয়া প্রচার গাড়ি, সামাজিক মাধ্যমে এবং টিভিতে বিজ্ঞাপন বা মোবাইলে অটোমেটিক ভয়েস কল – বিভিন্ন উপায়ে তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থীদের প্রচারে খরচ হচ্ছে। বামফ্রন্টের অভিযোগ, নির্বাচনী বন্ড বা কোনও অসাধু উপায়ে এই টাকা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
কমিউনিস্ট মতাদর্শে প্রভাবিত খবরের কাগজ গণশক্তি’র সম্পাদকীওতে প্রকাশিত হয়েছে – নির্বাচনী বন্ডের নামে অস্বচ্ছ টাকা ব্যবহার করছে রাজ্যের নির্বাচনে। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা টাকা দিচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূল অসৎ উপায়ে টাকা অর্জন করে, সেই টাকার ‘বহুলাংশ’ নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করে করছে। আরও বলা হয়েছে, সেই টাকার একটি অংশ তৃণমূলের ব্যক্তি নেতারাই নাকি গায়েব করে দিয়েছেন।
গণশক্তি’তে আরও লেখা হয়েছে – পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপির বেআইনি টাকার লেনদেন নির্বাচন কমিশন রুখতে পারবে কী না তা আশা করা কঠিন। সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, রাজ্যে শেষ ১০ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেননি। এবারেও একই কায়দায় দিকে দিকে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল।
সাধারণ ভাবে এই নির্বাচনে এখন পর্যন্ত, বিধানসভা নির্বাচনে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখে বুথ দখল এবং বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ শুনে অনেকেই বিস্মিত। তৃণমূলের শাসন কালে ২০১১ থেকে বিভিন্ন নিবার্চনে বিরোধীরা বুথ দখল এবং সন্ত্রাসের রাজনীতির অভিযোগ করেছে। বহিরাগত ঢুকিয়ে ভোট করানোর অভিযোগ বারবার উঠেছে। এবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে ঝাড়খণ্ড – বিহারের বহিরাগতের কথা শুনে অনেকেই অবাক। অন্যদিকে বিজেপিও দুর্বৃত্ত জোগারে সক্ষম। কমিশন কী নিরপেক্ষ কাজ করতে পারবে, প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা এবং কেন্দ্র বিশেষে সক্রিয় করে রাখা হয়। মানুষকে দলবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।
এদিকে, তৃণমূল অবশ্য বুথ দখলের অভিযোগ কমিশন নিয়ে শুধু নির্বাচন কমিশনের দোরগোড়াতেই আবদ্ধ রাখতে রাজি নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুযায়ী, তৃণমূল আদালতে যেতে চায়। মমতা বলছেন তিনি নিজের জয়ের ব্যাপারে চিন্তিত নন। তবে, তিনি চিন্তিত যে গণতন্ত্র কীভাবে রক্ষা হবে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তিনি কী এই কথা ভেবেছিলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন এখন যতটা তার প্রশ্নের মুখে, তখন কী তার কাছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এতটাই খারাপ ছিল?