কলকাতা: নির্বাচনী আবহে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেল। ২৪ ঘন্টার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। আজ রাত ৮ টা থেকে কাল রাত ৮ টা পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মূলত মুসলিম ভোটারদের সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বক্তব্য পেশ করেছিলেন তার প্রেক্ষিতে তাঁকে শোকজ করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই শোকজের জবাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট নয় তারা। অন্যদিকে শীতলকুচি কাণ্ডের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে মডেল কোড অফ কন্ডাক্টকে ‘মোদী কোড অফ কন্ডাক্ট’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। ফলে এখন মঙ্গলবার রাত ৮ টা পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল নির্বাচন কমিশনের তরফে।
নির্বাচনী এক জনসভায় মুসলিম ভোটারদের একজন হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি একাধিকবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল যে তিনি উস্কানিমূলক মন্তব্য দিচ্ছেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে শীতলকুচি ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙ্গুল তুলেছে বিজেপি। বলা হয়েছে তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নির্দেশ দিয়েছিলেন জনসমক্ষে। তাঁর উস্কানি মূলক মন্তব্যের জেরেই শীতলকুচির মতো ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হয়েছিল বঙ্গ বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা। এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি খারিজ করে দেওয়ার আবেদন জানানো হয় নির্বাচন কমিশনে। তবে আপাতত একদিনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মুসলিম ভোটার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য করেছিলেন তার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন যে উত্তর চেয়েছিল তাতে সন্তুষ্ট হয়নি তারা। প্রত্যেকটি বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে উত্তর দেওয়া হয়নি, আংশিকভাবে উত্তর দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শীতলকুচির ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি রবিবার ঘটনাস্থলে যাবেন। কিন্তু তার আগেই নির্বাচন কমিশন ওই এলাকায় রাজনৈতিক দলের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই প্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করেন। এমনকি তার আগেও একাধিকবার তিনি দাবি করেছেন যে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা বঙ্গ রাজনীতির উত্তাপ আরো আরো বাড়িয়ে দিল।