কলকাতা: সংক্রমণ কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না রাজ্যের। গতকাল নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫,৮৯২ জন, আর আজ তা বেড়ে হল ৬,৭৬৯ জন! কার্যত পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস সুনামি হচ্ছে তা বলায় বাহুল্য। পরিস্থিতি আরও করুণ থেকে করুণতর হচ্ছে। বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা৷ বিশ্বের দীর্ঘতম লকডাউনের পর অনলক পর্ব শুরু হওয়ার মাস সাতের মধ্যে বেআব্রু করোনা পরিস্থিতি৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফের পর্যটন কেন্দ্রে লাগাম পড়াতে চলেছে কেন্দ্র৷
কভিড পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা কলকাতার ভারতীয় জাদুঘর, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সহ অন্যান্য স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়াম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এর আগে গতবছর লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর জাদুঘর ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ এবার বাংলা নববর্ষের দিন থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়ামের দরজা৷
শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যের নতুন করে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন ৬,৭৬৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় ভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছেন ২,৩৮৭ জন। যদিও দিনপ্রতি সংক্রমণ নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে রাজ্যবাসীর। পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কলকাতা। সেখানে একদিনে সংক্রামিতর সংখ্যা ১,৬১৫ জন! এদিকে রাজ্যের সুস্থতার হার কমে হয়েছে ৯২.৫৫ শতাংশ। শেষ পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রাজ্যে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৬, ৯৮১। বুধবারের তুলনায় ৪৩৬০ বেশি। সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কলকাতা যেখানে আক্রান্ত ১,৬১৫ জন, তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, আক্রান্ত ১,৩৫৪ জন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে নয়া রেকর্ড তৈরি করেছে করোনা ভাইরাস৷ গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষের বেশি মানুষ৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে আছড়ে পড়তে চলেছে, সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা৷ তবে যে ধারনা করা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি৷ প্রায় প্রতিটি রাজ্যে দিন দিন বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হারও৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১০৩৭ জনের। সেই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়ে করোনায় সুস্থতার হার কমে হয়েছে ৮৯.৫১ শতাংশ।
এদিকে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ তিন দফার ভোট হয়তো একদিনে হবে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে ভোটের দফা পরিবর্তন করার কোনো রকম পরিকল্পনা তাদের নেই। তাই করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক নির্ধারিত দফা মেনেই হবে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। এক সর্ব ভারতীয় সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, আগামীকালের সর্বদলীয় বৈঠকের নির্বাচন কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের করোনাভাইরাস বিধি আরো কঠোরভাবে মানার পরামর্শ দেবে এবং নিয়ম ভাঙলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নিদান দেওয়া হবে।