লাদাখ ভ্রমণের টাকায় কোভিড আর্তদের সেবা দম্পতির!

লাদাখ ভ্রমণের টাকায় কোভিড আর্তদের সেবা দম্পতির!

 বারাসত: লাদাখ ভ্রমণের জমানো টাকায় কোভিড আর্তদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন দম্পতি৷

এখন তাঁদের লাদাকের বরফঘেরা লেকের ধারে বেড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু, অতিমারির এই কঠিন সময়ে তাঁরা এখন ব্যস্ত করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলির মুখে দু’বেলা খাবার তুলে দেওয়ার কাজে৷ অসুস্থ পৃথিবীকে সারিয়ে তুলতে ঘোরার জন্য সঞ্চয় ভেঙে মানুষের সেবায় নেমে পড়েছেন বারাসাতের দম্পতি সৌগত-ঐন্দ্রিলা। এই কাজে তৃপ্তি লাদাখ অ্যাডভেঞ্চারের থেকেও অনেক বেশি, বলছেন বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি।

গত লকডাউনের আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন যে স্বামী-স্ত্রী এবার গরমে মোটর সাইকেলে লাদাখ-লে ঘুরতে যাবেন। লাখ দুয়েক টাকা জমিয়েও রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তাদের লাদাখ ভ্রমণে বাধ সেধেছে৷ বাতিল ট্যুরের পরিকল্পনা। মন খারাপও হয়েছিল বটে। কিন্তু করোনা ত্রাসের নানা ছবি ও হাহাকার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আর চুপ করে বসে থাকতে পারেননি ওই দম্পতি। অসহায় মানুষের কান্নায় ট্যুরের জন্য জমানো টাকায় তাঁরা শুরু করে দিলেন করোনা আক্রান্তদের পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার কাজ। স্যোশাল মিডিয়ায় সেই কথা জানান তাঁরা। সবটাই বিনামূল্যে।

সৌগত সকালে বাজার করছেন। দুপুরের মধ্যে স্ত্রী ঐন্দ্রিলা রান্না করে আলাদা আলাদা প্যাকেট করে দিচ্ছেন। যে বাইক নিয়ে সৌগত ও ঐন্দ্রিলায় লে-লাদাখ যাওয়ার কথা ছিল, সেই বাইকে করেই সৌগত বারাসতের অলিগলি পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন করোনা আক্রান্তদের বাড়ির সামনে। রেখে দিয়ে আসছেন খাবার।

সকালে খাবারের জন্য ব্রাউন ব্রেড, বাটার ও দুই রকম ফল তাঁরা রাতেই পৌছে দিচ্ছেন করোনা আক্রান্তের বাড়িতে। ঐন্দ্রিলা জানালেন, তাঁদের খাবারের চাহিদা বেড়ে যাওয়া সহযোগী একজনকে নিয়েছেন। তার আগে গোটা ১৫ জনের রান্না তিনি নিজে হাতেই করতেন, সীমিত ক্ষমতায়৷ ফলে, শহরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই শুধু তাঁরা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, দুই সন্তানের আগ্রহের জন্যই তারা এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। দম্পতির দাবি প্যাঙগং লেকের সৌন্দর্য দেখার থেকেও বেশী তৃপ্ত তাঁরা এই আর্ত মানুষের সেবায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + nineteen =