কলকাতা: রাজ্য জুড়ে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন। আর সেই লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ মানুষের পাশে আবারও দাঁড়াল যাদবপুর ব্যাঙ্কপ্লট ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিটি। দেশ তথা রাজ্যের এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে কলকাতা শহরের ফুটপাতবাসী অসহায় মানুষের অন্নের সংস্থানে এগিয়ে দক্ষিণ কলকাতার এই ক্লাব।
রবিবার ২৩ মে থেকে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে রাজপথের ধারে ফুটপাথে থাকা দুঃস্থ অসহায় মানুষের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেওয়া শুরু করল যাদবপুর ব্যাঙ্কপ্লট ক্লাবের সদস্যরা। বাড়ন্ত করোনাকালে ও আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আগে মানুষের জন্য কিছু করা প্রয়োজন, এই ভাবনা থেকেই এই প্রকাণ্ড কর্মকাণ্ডের শুরুয়াত। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মাত্র সাতদিনের মধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সারা। বিপুল খাদ্য সামগ্রী চলে এল, এগিয়ে এলেন পাড়ার বিভিন্ন বয়সের বাসিন্দারা। তারপর রবিবার সাতসকালেই বেরিয়ে পড়লো খাদ্য সামগ্রী বোঝাই চারটি গাড়ি। দক্ষিণ কলকাতার সাউদার্ন অ্যাভিনিউয়ের আশেপাশে ফুটপাতে থাকা নিঃসম্বল পরিবারগুলির হাতে তুলে দেওয়া হল ১০০-এরও বেশি প্রয়োজনীয় খাবারের প্যাকেট। সেই প্যাকেটে থাকল চাল, ডাল, আলু, সোয়াবিন, মুড়ি, চিঁড়ে আর বিস্কুট।
সাউদার্ন অ্যাভিনিউয়ের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চষে ফেলে ‘বাড়িয়ে দাও, তোমার হাত’ নাম নিয়ে এই কর্মকাণ্ড এরপর যায় যাদবপুরের কামারপাড়া বস্তিতে। সেখানে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষের হাতেও তুলে দেওয়া হয় প্যাকেট। সম্পূর্ন নিজেদের উদ্যোগে এই প্রকাণ্ড কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে ক্লাবের বিভিন্ন বয়সের কর্তারা। তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই এগিয়ে আসছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রত্যয় বসু জানিয়েছেন, “আপাতত মাত্র ১০০ প্যাকেট দিয়ে শুরু করেছি। তবে পরের সপ্তাহেই প্যাকেটে সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে। প্রতি সপ্তাহে আমরা প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে দুঃস্থ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছি। আগামী অন্তত এক মাস ধরে সপ্তাহে একদিন করে এই কাজ চলবে। এরপরে ভবিষ্যতে আমাদের আরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা মানুষকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিক দূরত্ব ঘুচিয়ে দেওয়ার বার্তা দিচ্ছি।”
তবে এই প্রথম নয়। যাদবপুর ব্যাঙ্কপ্লট এর আগেও মানুষের স্বার্থে এগিয়ে এসেছিল। গত করোনা অতিমারীর চোখ রাঙানির মাঝেই যখন দক্ষিণবঙ্গ তছনছ করেছিল সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’, তখনও নিজেদের সাধ্য মতো দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন ক্লাবের সদস্যরা। গোটা পাড়া থেকে সংগৃহীত বিপুল ত্রান সামগ্রী তারা তুলে দিয়েছিলেন ভারত সেবাশ্রমের হাতে।