কলকাতা: মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে’। দলনেত্রীর এহেন মন্তব্যের পর ঘরছুট বাকি ছেলেরা এখনও কি ঘরে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন? অন্তত মুকুল প্রত্যাবর্তনে তৃণমূলের নতুুন ইনিং সেই ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে৷ এবার ঘরে ফেরার জল্পনা বাড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বাড়িতে গেলেন তৃণমূলত্যাগী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান, নির্বাচনে হারার পর আচমকা কুণালের বাড়িতে রাজীবের উপস্থিতি, বঙ্গ রাজনীতিতে বাড়িয়েছে কৌতুহল৷
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দলে থেকে কাজ করতে না পারা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মমতার ছবি বুকে নিয়ে দল ছেড়েছিলেন। বিজেপির তরফ থেকে তাঁকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে চার্টার্ড ফ্লাইটে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে অমিত শাহের বাসভবনে। সেখানেই শাহের কাছে দীক্ষা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নতুন ইনিংস শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন বনমন্ত্রী। বিজেপির ছায়াতলে এসে পুরনো দল তৃণমূলকে এবং সেই দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে শুরু করেন রাজীব। পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটে তৃণমূলও। বনসহায়ক পদে নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজীবের বিরুদ্ধে সুর চড়ান স্বয়ং দলনেত্রী৷ নির্দেশ দেন তদন্তের৷
একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনে প্রত্যাশা মতো বিজেপি রাজীবকে ডোমজুড়ের প্রার্থী করে। কিন্তু ফল প্রকাশ হতেই বদলে যায় ছবি৷ পরাজিত রাজীব দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর হঠাৎ বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খোলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। গুঞ্জন, তিনি নাকি তৃণমূলের ছত্রছায়ায় আবার ফিরে আসতে চাইছন৷ সেই জল্পনাকেই আরও খানিকটা উস্কে দিয়ে রাজীব পৌঁছে গিয়েছেন কুণাল ঘোষের বাড়িতে৷ সেখানে চলে রুদ্ধদার বৈঠক৷ যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো মুকুল যোগদান মঞ্চে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনের আগে যারা দল ছেড়েছে, যারা দলের নামে খারাপ করেছে, নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছে, তাঁদের ফেরাবে না তৃণমূল৷ যারা গদ্দারি করেছে, তাদের দলে নেব না! যারা গদ্দারি করছে, চরমপন্থী, তাঁদের ঠাঁই হবে না তৃণমূলে! এই প্রসঙ্গ মমতার মন্তব্য, আর যাই হোক, মুকুল দলের সঙ্গে গদ্দারি করেনি৷ এখন দেখার, রাজীব, মুকুল হতে পারেন কি না! কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজীবের জন্য খুলে যাবে তৃণমূলের পথ? দুয়ারে যে বনসহায়ক পদে নিয়োগ কেলেঙ্কারি!