দেবাঞ্জনের প্রতারণার জাল থেকে বাদ যাননি বোনের বান্ধবীও!

দেবাঞ্জনের প্রতারণার জাল থেকে বাদ যাননি বোনের বান্ধবীও!

কলকাতা:  ভ্যাকসিন প্রতারাণা কাণ্ডে প্রতি মুহূর্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ চারিদিকে প্রতারণার জাল বিছিয়ে রেখেছিল ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন৷ তার প্রতারণার ফাঁদ থেকে রেহাই পাননি পারিবারিক বন্ধুও৷ ভুয়ো ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন দেবাঞ্জনের বোনের বান্ধবীও৷ 

আরও পড়ুন- একুশে শূন্য হাত! হারানো জমি পুনরুদ্ধারে মরিয়া বহরমপুরের ‘রবিন হুড’ অধীর

দেবাঞ্জনের বোনের বান্ধবী হওয়ায় ছোট বেলা থেকেই তাদের সঙ্গে পারিবারিক যোগাযোগ ছিল স্নেহার৷ পরিচিত হওয়ার পরেও কী ভাবে তাঁদের সঙ্গে এই প্রতারণা করা হল, তা ভেবে বিস্মিত দেবাঞ্জনের বোনের বান্ধবী৷ এই স্নেহাকে নিয়েই কিন্তু একটি গুঞ্জন উঠেছে৷ তিনি নাকি দেবাঞ্জনের বান্ধবী৷ যদিও এদিন স্নেহা সাফ জানান, ‘‘দেবাঞ্জন আমার বান্ধবীর  দাদা৷ সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে আলাপ৷ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমাকে দেবাঞ্জনের বান্ধবী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল৷’’

স্নেহা  আরও বলেন, ‘‘দেবাঞ্জনের বোন আমার বাল্যবন্ধু৷ আমি দেবাঞ্জনের গার্ল ফ্রেন্ড নই৷ আমি ওঁর সঙ্গে কোনও রিলেশনশিপে নেই৷’’ স্নেহা জানান, ওই ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে তিনি একা যাননি৷ তাঁদের একটা বন্ধু সার্লেক আছে৷ সকলকেই ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা বলা হয়৷ দেবাঞ্জন বলেছিলেন,  আমি কলকাতা পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার৷ কলকাতা পুরসভা থেকে ভ্যাকসিন ক্যাম্প চালাচ্ছি, সেখান থেকেই টিকা নিয়ে নিস৷ 

তবে দেবাঞ্জন আইএএস পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করছিলেন কিনা, পরীক্ষা দিচ্ছেলেন কিনা, সে বিষয়ে বান্ধবীর সঙ্গে কোনও দিনই কথা হয়নি স্নেহার৷ তিনি বলেন, বান্ধবীর দাদা কী করছে, সে বিষয়ে কোনও দিন আলোচনা হয়নি৷ কলেজ পাশ করার পর সকলেই নিজের কর্মজগতে ব্যস্ত ছিলাম৷ এর মাঝেই জানতে পারি বান্ধবীর দাদা আইএএস হয়েছেন৷ এর পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও খবরটা জানা যায়৷ পরিচিত কেউ আইএএস হয়েছে শুনে আমরা সকলেই খুশি হয়েছিলাম৷ 

আরও পড়ুন- লক্ষ্য ’২৪, ‘সবুজ সেনার সেনাপতি’, ‘যুবরাজ’ অভিষেককে সামনে রেখে নয়া গান তৃণমূলের

তিনি জানান, ওই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে শুধু আমার বন্ধুরাই নয়, আমাদের সকলের বাবা-মায়েরাও টিকা নিয়েছেন৷ আমাদের শরীরে কী ভ্যাকসিন ঢুকেছে কেউই জানি না৷ অন্যদিকে জেনে বুঝে দেবাঞ্জন কী ভাবে এটা করল, সেটা ভেবেই অবাক লাগছে৷ স্নেহা বলেন, ‘‘১০ তারিখ বাবার সঙ্গে যখন ক্যাম্পে যাই তখন বাবাকেও ওখান থেকে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিতে বলা হয়৷ সেখান থেকেই বাবা দ্বিতীয় ডোজ নেন এবং আমরা প্রথম ডোজ নিই৷’’ ১১ তারিখ ওই ক্যাম্প থেকে স্নেহার মা টিকা নেন৷ ১৬ তারিখ, পরিবারের বাকি সদস্যরা ভ্যাকসিন নেন৷ কলকাতা পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার টিকা নিতে বলায় চোখ বুজেই বিশ্বাস করেছিলেন তাঁরা৷ 

টিকা নেওয়ার পর মোবাইলে মেসেজ ও সার্টিফিকেট না পাওয়ায় দেবাঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, বারবার তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানান স্নেহা৷ কিন্তু কেউই বুঝতে পারেনি যে তাঁরা প্রতারণার শিকার৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 6 =