বনগাঁ: বয়সটা স্রেফ একটা সংখ্যা মাত্র৷ আসল হল মনের জোর৷ পাঁচ কুড়ি পেরানোর পরও এখনও দিব্যি প্রতিদিন হাঁটতে বেড়ান গদাধর রায়৷ শতায়ু যুবক রবিবার স্বেচ্ছায় মরণোত্তর দেহদান করবার অঙ্গীকার করলেন৷
‘তাঁর মৃত্যুর পর তার দেহ নিয়ে মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যবহার করুক৷ এবং আগামী প্রজন্মের সকলে দেহ দান করুক৷’’- অন্তরের এই তাগিদ থেকেই রবিবার মসলন্দপুর বিজ্ঞান ও চেতনার মঞ্চের কর্তাদের কাছে পৌঁছে মরণোত্তর দেহদান করবার অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করলেন তিনি৷ বললেন, ‘‘মারা যাওয়ার পর সেই দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চিকিৎসার কাজে লাগতে পারে৷ অথচ আজও সেই সচেতনতা গড়ে ওঠেনি৷ এটা সত্যি আমাদের সকলেরই দুর্ভাগ্যের৷’’
সীমান্ত শহর বনগাঁর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুড়ির মাঠ এলাকার বাসিন্দা গদাধরবাবু৷ বর্তমানে তাঁর বয়স ১০২ বছর৷ ২০১৮ সালে মারা গিয়েছেন স্ত্রী৷ তিন ছেলে আর তিন মেয়েকে নিয়ে তাঁর ভরা সংসার৷ ইয়ং ম্যানের সিডিউলটা এরকম: দুবেলা খাবার , তিনবেলা ব্রাশ , সময়ে সময়ে কাজকর্ম , দিনে দুটো করে পেপার পড়া , মাঝেমধ্যে পাড়ার রাস্তা দিয়ে হাঁটতে যাওয়া!
ছোট থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । পরবর্তীতে দলিল লেখকের কাজ যুক্ত হন৷ গদাধরবাবুর ছেলে পঙ্কজ রায় জানান, ‘‘১৯১৯ সালের আষাঢ় মাসে বাবার জন্ম । আধার কার্ড ভোটার কার্ডে সঠিক জন্ম দিন নেই । বাবার মরণোত্তর দেহ দানের সিদ্ধান্তে আমরা গর্বিত। সেভাবে এবিষয়ে যেহেতু এখনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি, তাই অনেকে আমাদের সমালোচনা করতে পারেন৷ কিন্তু পুত্র হিসেবে সত্যি বাবার মানসিকতা দেখে গর্ব অনুভব করছি৷’’