সর্বগ্রাসী গঙ্গা গিলে খাচ্ছে সংসার! ঘটিবাটি আগলে নতুন ঠিকানার খোঁজ

সর্বগ্রাসী গঙ্গা গিলে খাচ্ছে সংসার! ঘটিবাটি আগলে নতুন ঠিকানার খোঁজ

কৃষ্ণনগর: সর্বগ্রাসী গঙ্গা গিলে খাচ্ছে সবকিছু, মুহূর্তেই পাড় ভেঙ্গে বিঘের পর বিঘে জমি চলে যাচ্ছে নদীবক্ষে। প্রতিবছর বর্ষায় গঙ্গার এই সর্বগ্রাসী রূপ আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে।

চাষের জমি, গাছপালার পর এবার গঙ্গার গ্রাসে যেতে বসেছে বসতবাড়িও।   আতঙ্কে তাই ঘর বাড়ির কাঠামো ভাঙতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। কেউ ঘরের টিনের চাল খুলতে ব্যস্ত, তো কেউ জড়ো করে রাখছেন বাঁশ, পলিথিন। মহিলারা খালি করছেন রান্নাঘরের সরঞ্জাম। নিজেদের মতো করে এই কাজে হহাত লাগিয়েছে পরিবারের খুদেরাও।

বর্ষাকালে এটাই যেন রোজ নামচা। নদীয়ার শান্তিপুরের পৌরসভা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরসরাগর এলাকা এর আগেও একাধিকবার ভাঙ্গনের সাক্ষী থেকেছে। বিঘা বিঘা জমি, অনেকের বাড়িঘর তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গায়। ভাঙ্গন যেন শুধু গঙ্গার পাড়েই নয়, পাড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সংসারেও চলছে নিয়মিত। সব হারানোর দুঃখ বুকে নিয়ে বাড়ি-ঘর, ঘটি বাটি আগলে নতুন ঠিকানার খোঁজ, এটাই জীবন তাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গঙ্গা ভাঙ্গন এই প্রথম নয়। প্রতিবছর নিয়মিতভাবে ভাঙন চলতে থাকে। তবে বর্ষা এলেই ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সকলের কাছেই ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ।

গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কথা জানিয়ে জেলাশাসক থেকে শুরু করে সেচ দপ্তরে লিখিত আবেদনও জানান স্থানীয়রা। কিন্তু সাড়া মেলেন নি। ভাঙ্গন কবলিত অংশে বালির বস্তা দিয়েই দায় সেরেছে সেচ দপ্তর। অগত্যা গঙ্গা পাড় ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান, ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে শান্তিপুর থানার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। মাঝ রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে রাস্তা অবরোধ। আধঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। তবে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধ করতে কবে উদ্যোগী হবে সরকার? এর উত্তর যদিও অজানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − six =