লেহ: করোনা ভাইরাসের আঁতুড়ঘর চিন ২০২০ সালের অধিকাংশ সময় জুড়েই উত্তাপে রেখেছিল ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে। লাদাখ সীমান্তে চিনের আচমকা শক্তি বৃদ্ধির ফলে স্বভাবতই বিব্রত ও বিরক্ত হয়েছিল ভারত। তবে করোনা আবহে চিনের এই আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দিতে পেরেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা দপ্তর। এদিন বর্ষশেষের রিপোর্টে সে কথাই স্পষ্ট করেছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি তুলে ধরা হয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে কীভাবে নানা উপায়ে লাদাখে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়েছিল লাল ফৌজ। সীমান্ত অঞ্চলে বিপুল সেনা মোতায়েন তো বটেই, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নানা অস্ত্রশস্ত্রের সমাবেশও করা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে প্রতিরক্ষা দপ্তরের ওই রিপোর্টে।
যদিও ঠিক কী ধরণের অস্ত্র ভারতের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিল চিন, তা স্পষ্ট জানা যায় নি। তবে গালওয়ান ও প্যাংগং সোতে ব্যবহৃত পাথর, ধারালো পেরেক বসানো লাঠি ও লোহার রডের ছবি প্রকাশ্যেই দেখা গিয়েছিল। চিনা বাহিনী জোর করে স্ট্যাটাস কো বদলে দিতে উদ্যত হয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাও প্রস্তুত ছিল বলেই দাবি করা হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে।
গত ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। রিপোর্টে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের সাফল্যের পিছনে বড়সড় কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনাকে। বায়ুসেনার সাহায্যেই দ্রুততার সঙ্গে সমস্ত বন্দোবস্ত করে উঠতে পেরেছে স্থলসেনা বাহিনী, এমনটাই বলা হয়েছে ওই রিভিউ রিপোর্টে। দ্রুত অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের জন্য বায়ুসেনার সাহায্যে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণও সম্ভব করেছে স্থলবাহিনী।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, পূর্ব চুক্তি লঙ্ঘন করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় একাধিক জায়গায় জমি জবরদখল করার মতলবে ছিল লাল ফৌজ। কিন্তু ভারত তাকে দৃঢ়তার সঙ্গেই প্রতিহত করতে পেরেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন গালওয়ান এলাকায় চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। সেই সঙ্গে লাল ফৌজেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু চিনের তরফে মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি।