রামনগর: অবৈধ সম্পর্কের জেরে খুন। সম্পর্কের জেরে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ গৃহবধূর বিরুদ্ধে। টাকা দিতে না পারায় অবশেষে প্রেমিককে খুন করার অভিযোগ উঠল গৃহবধূ ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। অবশেষে শেষ রক্ষা হল না। মৃত যুবকের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর থানার কঁইনাড়া গ্রামে।
রামনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তরা হল ঝর্ণা সামন্ত ও তার স্বামী নিমাই সামন্ত। রবিবার ওই দম্পতিকে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অবৈধ সম্পর্কের জেরে যুবককে খুন হতে হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামনগর থানার দেদাঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা নির্মল বেরা কর্মসূত্রে ভিন রাজ্য হায়দ্রাবাদে থাকতেন দীর্ঘদিন। এরপর সেখান থেকে সৌদিতে যান। লকডাউনে কারণে বাড়ি ফেরে নির্মল বেরা। ভিন রাজ্য ও বিদেশে থাকাকালীন প্রচুর টাকা রোজগার করে নির্মল বেরা বলে পরিবার থেকে প্রতিবেশীদের দাবি। রামনগরের কঁইনাড়া গ্রামের ঝর্ণা সামন্তের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে নির্মল বেরা। প্রায়ই ঝর্ণার বাড়িতে যাতায়াত করত নির্মল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। গৃহবধূর নামাঙ্কিত নির্মলের হাতে ট্যাটু করা ছিল। এরপর টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে নির্মলের সঙ্গে গৃহবধূ ঝর্ণা বচসা শুরু হয়। এমনকি নির্মলের ব্যবহৃত মোবাইল হাতিয়ে নেয় ঝর্ণা সহ তার পরিবারের সদস্যরা বলে অভিযোগ। মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করলে নির্মল সেই টাকা দিতে পারেনি বলে এমনটাই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে নিতাই সামন্তের পল্টি মুরগি ফার্মের পাশে অচৈতন্য অবস্থায় নির্মল বেরার (৩১) ্ মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে একাধিক রহসে্যর দানা বাঁধতে শুরু করে। যদিও ঝর্ণা সহ তার স্বামী দাবি করেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রামনগর থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ থেকে মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যরা কেউই এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মেনে নিতে পারেননি।
শনিবার রাতে রামনগর থানায় খুনের অভিযোগ তুলে সরব হন মৃত যুবকের দাদা রবীন্দ্র বেরা।এমন অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে রামনগর থানার পুলিশ। রাতেই অভিযান চালিয়ে ওই দম্পতি গ্রেফতার করে। মৃত যুবকের দাদা গোপাল বেরা বলেন, ” ভাইকে খুন করা হয়েছে। নিতাই সামন্তের ভাই বন্ধু ছিল। সেই সুবাদে ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে ছিল বলে ভাই কাছ থেকে শুনেছিলাম। অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। পুলিশ ও আদালতের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।” রামনগর থানার ওসি সৌরভ চিননা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে মহিলা ও তার স্বামীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ অনেকটাই পরিষ্কার হবে।”