নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক দরবারে ভারত আজও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেই পরিচিত। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলিকে ছোঁয়ার দৌড়ে ভারতের অন্যতম কাঁটা দারিদ্র্য। পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ সালের গণনা অনুযায়ী এদেশে গরীব মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০%। করোনা অতিমারীর প্রকোপে এই সংখ্যা যে আরো খানিক বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য।
অথচ, দারিদ্র্য সত্ত্বেও ভারতকে বিশ্বের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রাখা যায় অনায়াসেই। দারিদ্র্য আর বিত্ত যেন পাশাপাশি বাস করে এদেশে। একদিকে যখন গোটা বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় নাম লেখান মুকেশ আম্বানি, ধনকুবেরদের সঙ্গে চলে রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা, অন্যদিকে তখন এদেশেই মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ দৈনিক ১০০ টাকারও কম উপার্জন করে দিনপাত করেন। তবে এহেন ভারত ছেড়েই আবার চলেও যান ধনকুবেররা।
সম্প্রতি হাতে আসা এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে ভারত থেকে বিদেশে চলে গিয়েছেন প্রায় ৫০০০ ধনকুবের। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের স্থান চিন ও রাশিয়ার পরেই। ওই দুই দেশ থেকেও স্বেচ্ছায় বিদায় নিয়েছেন বহু বিত্তশালী ব্যক্তি। দেশের মাটির টান ছেড়ে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী হয়েও কেন বহির্মুখী হচ্ছেন ধনকুবেররা? উঠছে প্রশ্ন।
বস্তুত, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ভারতে মোট ধনসম্পদের প্রায় ৪৮ শতাংশের মালিক এদেশের ধনকুবেররা। শুধু আম্বানি আদানি বা টাটাই নয়, তালিকায় নাম রয়েছে আরো অনেকের। সম্পত্তি হিসেব করলে দেশের মোট ধনকুবেরের সংখ্যাটা প্রায় ৩ লক্ষ ২৭ হাজার। কিন্তু এঁদের মধ্যে অন্তত ৫০০০ দেশত্যাগী হয়েছেন স্বেচ্ছায়।
মূলত , উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সমাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরেই ঘর ছেড়েছেন ধনকুবেররা, মনে করে বিশেষজ্ঞ মহল। দেশে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তার অভাব, দূষণ এবং বেকারত্বের মতো সমস্যাগুলি থেকে দূরে থাকতে চেয়েছেন তাঁরা। সেই উদ্দেশ্যেই মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন উন্নত দেশগুলির দিকে।