মালদহ: বুধ, বৃহস্পতির পর এবার শুক্রবার৷ ফের অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মালদহে মৃত্যু হল শিশুর। এর আগে দু’দিনে এখানে মৃত্যু হয়েছিল আরও তিন শিশুর৷ ফলে অজানা জ্বরের প্রকোপে মালদহে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পাঁচ৷ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দুই শিশুর নাম আসমা খাতুন এবং ভুতনির দেব মন্ডল। আসমার বাড়ি ঝাড়খণ্ডে৷ সে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল৷ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘শিশু মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’
তবে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেও শিশুদের মধ্যে বাড়ছে অজানা জ্বরের সংক্রমণ৷ সঙ্গে দোসর হিসেবে হাজির হয়েছে ডেঙ্গি ও স্ক্রাব টাইফাসও। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু অজানা জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে৷ দেহে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, বুকে ব্যথার মতো উপসর্গও। স্বভাবতই, পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে আজ শুক্রবার উত্তরবঙ্গে গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ দল। সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে দক্ষিণের জেলাগুলিতেও৷
সরকারিভাবে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গের হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রয়েছে শয়ে শয়ে শিশু৷ জলপাইগুড়িতে ৯২, আলিপুরদুয়ারে- ১১২, কোচবিহারে-১১৩ জন, কালিম্পংয়ে- ৫, দার্জিলিংয়ে- ৮৬ জন, মালদহে ১৯৬ জন, উত্তর দিনাজপুরে-৬৪ জন এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৯২ জন। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের আসানসোলে ১৪৮ জন, মুর্শিদাবাদ–১৫২ জন, দুর্গাপুরে-৮০ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে – ৩০ জন শিশু আক্রান্ত ভাইরাল ফিভারে৷ যদিও চিকিসকরা বলছেন, ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই৷
বিশেষজ্ঞকা বলছেন, RS ভাইরাস এবং ভাইরাল নিউমোনিয়ার আক্রমণেই বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ৷ একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং স্ক্রাব টাইফাসেরও খোঁঝ মিলেছে। যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেছেন, “আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে প্রতি বছর এই সময় শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এটা আশ্চর্যের কিছু নয়। তবে এবাড়ে সংখ্যাটা একটু বেশি৷ সবটাই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে৷ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷’’