কলকাতা: বদলে গিয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির মালিকানা৷ কোটি টাকা দিয়ে শোভনের বাড়ি কিনেছেন বৈশাখী৷ যার জেরে শুরু হয়েছে ফের ত্রিমুখী লড়াই৷
কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই উইল করে ফেলেছেন৷ তাতে বলা হয়েছে, তাঁর অবর্তমানে তাঁর স্থাবর, অস্থাবর যাবতীয় সম্পত্তির মালিকানা পাবেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এরই মধ্যে বেহালায় শোভনের বাড়ি বিক্রি নিয়ে প্রকাশ্যে ত্রয়ীর টানাপোড়েন৷
আরও পড়ুন- স্বামীর সঙ্গে দিদির বাড়ি যাওয়ার পথে বাইক থেকে ছিটকে লরিতে পিষ্ট মহিলা
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, লাগাতার আইনি লড়াইয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছেন তিনি৷ সেই সময় তাঁকে আর্থিক দিক থেকে সাহায্য করেছিলেন বান্ধবী বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়৷ তার প্রতিদানেই শোভন তাঁর বেহালার বাড়ি লিখে দিয়েছেন বৈশাখীর নামে৷ শোভন বলেন, নিশ্চিত ভাবেই একটা অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়েছিল৷ যার জন্য বৈশাখী আমাকে সাহায্যও করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু আমি কী ভাবে বৈশাখীর থেকে টাকা নেব? তাই আমার একমাত্র সম্পত্তি বেহালার বাড়ি বৈশাখীর কাছে বিক্রি করেছি।’’
সাত কাঠা জমির উপর ৪ বিরাট তলা বাড়ি৷ যার বাজার মূল্য কোটি টাকার বেশি হবে৷ এই বাড়িতেই দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন শোভনের স্ত্রী তথা বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়৷ এদিকে, মালিকানা হাতে পেয়েই রত্নাকে বাড়ি ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, শর্ত মানলে তবেই ওই বাড়িতে থাকতে পারবেন শোভনের ছেলে ও মেয়ে৷
বৈশাখী বলেন, ‘‘ওঁর সমস্ত রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ উনি এতদিন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী হিসাবে ওখানে থেকেছেন৷ ওঁকে আইনের পথেই নোটিশ পাঠাব৷ রুহিকে নিশ্চই বলব, ওটা ওঁর বাবার বাড়ি৷ চাইলে সারা জীবন থাকতে পারে৷ কিন্তু মায়ের সঙ্গে নয়৷ ঋষি কোনও আর্জি জানালে, সেটা আলাদা বিষয়৷ সেটা নিয়েও নিশ্চই ভাবব৷
অন্যদিকে রত্না বলেন, আমি ২১ বছর ধরে এই বাড়িতে আছি৷ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা থাকলে আমাকে এখান থেকে সরাক৷ আমৃত্যু এখানেই থাকব, আইনি পথে চলব৷ তিনি আরও বলেন, যেদিন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বুদ্ধিতে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন সেদিন থেকেই উনি আর গোডাউনের মালিক নন৷ জমি বাড়ি বিক্রি করে খেতে হচ্ছে শোভনকে৷
মায়ের সুরেই বাড়ি না ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছেলে ঋষিও৷ তিনি বলেন, একজন মহিলা এসে বলল এটা আমার বাড়ি, আমি কিনে নিলাম, আর সেটা তাঁর হয়ে গেল৷ আমার দাদুর থেকে এই বাড়ি আমার বাবা পেয়েছেন৷ সেখান থেকে আমি পেয়েছি৷ শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, এই বাড়িতে আমার জন্ম নেওয়াটা ভুল৷ আমি এখানে জন্মেছি৷ ওঁকে বলব ক্ষমতা থাকলে আমার সামনে এসে দাঁড়াক৷ আমি যেদিন শেষ নিঃশ্বাস নেব, সেদিন আমার দেহ এই বাড়ি থেকে বেরবে৷ এখান থেকে নড়ব না৷
প্রসঙ্গত, শোভনের বেহালার বাড়িতে দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে থাকেন রত্না৷ অন্যদিকে, ৮ বছরের মেয়েকে নিয়ে গোলপার্কের বাড়িতে থাকেন বৈশাখী৷ এরই মধ্যে বেহালার বাড়ির মালিকানা বদলের জেরে সম্মুখ সমরে বৈশাখী ও রত্না৷ এরই মধ্যে স্বামী মনোজিতের সঙ্গে বিচ্ছেদের পছে বৈশাখী৷ কিন্তু শোভনের সঙ্গে এখনও আইনি বিচ্ছেদ হয়নি রত্নার৷ তাই এই ত্রিকোন সম্পর্ক কোথায় গিয়ে পৌঁছয় সেটাই দেখার৷