ভেস্তে গেল তৃণমূলের অনাস্থা, পঞ্চায়েতে ক্ষমতা অটুট রাখল বিজেপি

ভেস্তে গেল তৃণমূলের অনাস্থা, পঞ্চায়েতে ক্ষমতা অটুট রাখল বিজেপি

মালদা: ভেস্তে গেল বিজেপি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা। বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল একদল পঞ্চায়েতের সদস্য। তৃণমূলের দখলে আসার আগেই সমস্ত ছক ভেস্তে গেল অনাস্থার। সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে না পারায় অনাস্থার তলবি সভা খারিজ করে দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে।

মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১৮। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এরমধ্যে একক ভাবে ১০ টি আসনের জেতে বিজেপি। তৃণমূল পায় ছটি আসন। নির্দল প্রার্থীরা জেতে একটি করে আসনে। পরে প্রধান নির্বাচনে দুপক্ষ সমান হয়ে গেলে লটারির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির বিউটি মন্ডল। উপপ্রধান হন বিজেপির শংকর মণ্ডল। সম্প্রীতি বিজেপির পাঁচ সদস্য, তৃণমূলের দু’জন সদস্য এবং কংগ্রেস ও নির্দলের একজন  সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা দেয়। প্রশাসনের তরফে বৃহস্পতিবার গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থার তলবি সভার দিন ধার্য করা হয়। যাকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসনের জোর তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় পঞ্চায়েত চত্ত্বরজুড়ে। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় অনাস্থার কাজ শুরু হয়। কিন্তু অনাস্থার পক্ষে থাকা নয় জন সদস্য পঞ্চায়েতে আসলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে না পারায় অনাস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়।

বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনাস্থা সফল করতে দেয়নি দলেরই কিছু নেতা বলে অভিযোগ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের। এপ্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য চাঁদ সুলতানা জানান, বিসিবি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছিল। কিন্তু মানিকচক বিধানসভার বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্রের জামাই সমদীপ সরকার এই অনাস্থা সফল হতে দেয়নি। বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করে বিজেপির প্রধানকে টিকিয়ে রেখেছে ফলে অনাস্থার বাতিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী আব্দুল আলিম জানান, দলের একজন সদস্য কে নিখোঁজ করে রেখেছে দলেরই নেতারা। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিজেপির পঞ্চায়েত টিকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিধায়ক তথা ব্লক সভানেত্রী সাবিত্রি মিত্রের জামাইের নামে সরাসরি টাকা লেনদেন করেছে বলে আজ প্রধান  অপসারণ হল না  বিজেপির প্রধান  থাকল।   গোটা ঘটনায় দলের নৈতিক পরাজয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে মানিকচক অঞ্চল তৃনমূলের  চেয়ারম্যান মোঃ সানোয়ার আলী পারভেজ জানান, দলের নেতৃত্বকে না জানিয়েই অনাস্থা আনা হয়েছিল পঞ্চায়েতে। দলকে কোনও গুরুত্বই দেয়নি এই সমস্ত সদস্যরা। তাই দলের নেতৃত্ব গোটা বিষয় অজানা। এখন নিজেদের দোষ ঢাকতে দলের নেতাদের দোষারোপ করছে। মিথ্যে কথা বলে দলে নেতাদের কলুষিত করার চক্রান্ত চালাচ্ছে তারা। তৃণমূল এই সমস্ত কাজে প্রশ্রয় দেয় না। গোটা বিষয় উর্দ্ধতন নেতৃত্বকে জানানো হবে৷ আগামীদিনের যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তারাই নেবে।

অন্যদিকে এই বিষয়ে মানিকচক বিধানসভার বিধায়িকা তথা মানিকচক ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র ফোনে জানাই, মানিকচক পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্যদের নিয়ে তৃণমূলের দুই সদস্য দলকে কিছু না জানিয়ে অনাস্থা এনেছিল। তার কারণে দলের বাকি সদস্যরা নির্দেশমতো আজকের অনাস্থা সভায় হাজির হয়নি।   তৃণমূল কংগ্রেস কখনও সমর্থন করে না বিজেপিকে নিয়ে পঞ্চায়েত গঠনে ।  এর আগেও মানিকচকের চৌকি মির্জাপুরে গ্রাম পঞ্চায়েতে  বিজেপিকে সমর্থন করায় আমরা কয়েকজন সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার করেছি।  আজ মানিকচক পঞ্চায়েতে বিজেপিকে সমর্থন করছে এবং দলের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  পাশাপাশি আব্দুল আলিম নিজেকে তৃণমূল নেতা বলে দাবি করে বলেন, দলের বিরুদ্ধে যেকথা বলছে সে দলের কেউ না। তৃণমূলের সঙ্গে কোন তার যোগাযোগ নেই ।  তার কথায় আমরা কোন গুরুত্ব দিই না।  নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে যারা পঞ্চায়েত গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছিল তাদের তৃণমূল সমর্থন করে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × two =