বাঁকুড়া: প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে যখন শারদোৎসবে সাম্প্রদায়িক হানাহানির খবর আসছে, ঠিক তখনই লক্ষীপুজোয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন ওরা৷ ওরা মানে বাঁকুড়ার সোনামুখীর প্রত্যন্ত গ্রাম ধানসিমলার মানুষ। গত সাত বছর ধরে শম্ভুনাথ কর্মকারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লক্ষ্মী পুজো করছেন ইউসুফ মণ্ডলরাও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্গাপুজার পাশাপাশি এই এলাকার অন্যতম বড় উৎসব লক্ষীপুজোও। এই পুজোয় জাতিধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন এলাকার প্রতিটি মানুষ। একই সঙ্গে পাশাপাশি বসে চলে পংক্তিভোজনও। সবমিলিয়ে চারদিকে যখন ধর্ম নিয়ে হিংসা আর হানাহানির খবর, ঠিক তখনই বছরের পর বছর এই পুজোকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির সৃষ্টি করছেন এখানকার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভুনাথ কর্মকার, অনিল দাসেরা বলেন, ‘‘মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাটা তো আমাদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে৷ আমরা সেটুকুই করছি মাত্র৷’’ একই সঙ্গে শম্ভুবাবু বলেন, ‘‘আমাদের এখানে পুজোতে এলে বুঝতে পারবেন এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই৷ হিন্দু, মুসলমান নয়৷ আমাদের মধ্যে সকলের একটায় পরিচয়, আমরা একে অপরের প্রতিবেশী, নিকটাত্মীয়৷’’
গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ মণ্ডল, রেজ্জাক আলিরা বলেন, ‘‘সত্যি আমাদের গ্রামে হিন্দু, মুসলমানের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই৷ তাই তো পুজোর চাঁদা তোলা থেকে ফল কাটা, সবেতেই আমরাও হাত লাগাই৷ এখানে কোনও বিশেষ জাতি নয়, একটাই ধর্ম৷ সেটা হল মানব ধর্ম৷’’ গ্রামবাসীদের কথায়, দু’দিনের পৃথিবী৷ কি হবে ঝামেলা অশান্তি করে৷ বরং মিলে মিশে থাকার আনন্দটাই তো আলাদা৷