বাঁকুড়া: এক-দুই-তিন…এভাবে কেটে গিয়েছে একশো ১২২ বছর। আর ওই সময়কালের আগে গজরাজের আক্রমণের হাত থেকে জমির ফসল বাঁচাতে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় এলাকার জঙ্গল লাগোয়া রামকানালী গ্রামে কোজাগরী লক্ষী পুজোর দিন শুরু হয়েছিল ‘গজ লক্ষ্মী’র পুজো।
সেকারণেই এখানে চিরাচরিত পেঁচা নয়, দেবী লক্ষী হাতির পিঠে উপবিষ্টা। মাঝের কিছু বছর হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও গত কয়েক বছর ধরে ফের শুরু হয়েছে হাতির উপদ্রব। জমির ফসল বাঁচাতে হিমশিম অবস্থা গ্রামের মানুষের। তাই চলতি বছরে করোনা আবহের মধ্যেও গ্রামে পুজো হচ্ছে। তবে সেই আগের জৌলুস নেই। নিয়ম রক্ষার পুজো হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন।
গ্রামবাসী সৌমেন দাস বলেন, ‘‘আমাদের এই এলাকা মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ওই চাষের জমিতে হাতির উপদ্রব বরাবর। সেকারণেই গজরাজের আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে শস্যের দেবী লক্ষীর বাহন হাতিকে আমরা পুজো করি। তাই আজও ১২২ বছরের প্রথা অব্যাহত৷’’ আর এক গ্রামবাসী শিউলী শিট ধাড়া বলেন, ‘‘জঙ্গলের হাতির আক্রমণে মাঠের শস্য বাঁচাতেই গজলক্ষী পুজোর সূচনা করা হয়েছিল৷ আজও নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা সেই প্রথা মেনে চলেছি৷’’
তাহলে মাঝে মধ্যে হাতির হানা কেন হচ্ছে? গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, হয়তো পুজোয় কোনও গোলমাল হয়ে থাকতে পারে৷ তাই এবারে নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা পুজোর যাবতীয় আয়োজন করেছি৷ মায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা, হাতি যেন না আসে হামলা চালাতে৷ স্বভাবতই, ফি বারের মতো এবারও পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠেছেন গ্রামবাসীরা৷