চোপড়া: দুর্গা পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্গা পূজা। উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের নন্দকিশোর গছের মানুষ এই অষ্টমঙ্গলি দুর্গাপুজোকে ঘিরে রীতিমতো মেতে উঠেছেন।
এই দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে প্রাচীন জহরা মেলা পূজার উদ্দীপনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও কয়েকগুণ। জহরা পাল নামে এক ব্যাক্তি স্বপ্ন দেখে। তারপর থেকে তিনি এই পুজো ও মেলার আয়োজন করে। তিনি মারা যাওয়ার পর তার নামেই এই মেলার নাম হয় জহরা মেলা। তার মৃত্যুর পর এই পুজো বারোয়ারি পূজো হিসাবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুজো করে চলেছেন।
চোপড়ার থানার নন্দ কিশোর গছ এলাকার এই দুর্গা পূজা এবার ১৩৪ বছরে পা দিল। শতাব্দী প্রাচীন পুজোতে এখনো প্রাচীন রীতি মেনেই চলে এই পুজো। সব ধর্মের মানুষ উপস্থিত হন এখানে। কয়েক লক্ষ লোকের সমাগমে যাতে দর্শনার্থীদের জন্য কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়ে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই বছর এই পুজো ও মেলা ১৩৪ বছরে পা দিল। বিহার, বাংলার,নেপাল,বাংলাদেশ সহ হাজারো মানুষের ভিড়ে রীতিমতো জমে ওঠে এই জহরা মেলা।
সেখানে উপস্থিত হন অসংখ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও।আর তাই এই মেলা হয়ে উঠেছে এক সম্প্রীতির মেলা।দুর্গাপূজা শেষ হবার আটদিনের মাথায় এই পূজা শুরু হয় বলে একে অষ্টমী দুর্গা পূজা হিসেবেও অনেকেই অভিহিত করেন। আজকে এই অষ্টমঙ্গলির দুর্গা দেবীর পুজো। শুক্রবার থেকে তিনদিন ধরে চলবে মেলা।এই মেলার বিশেষত্ব যে এখানে বাগচারা নামে একটা ফল পাওয়া যায়। যে ফল আর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
এক চালার মধ্যে রয়েছে দুর্গা। দুর্গার পাশাপাশি শিব,নারায়ণ,কামদেব সহ আঠাশ রকমের মূর্তি স্থান পেয়েছে সেখানে।একসময় এই মেলাতে তাল পাতার ভেঁপু,মাটির খেলনা পুতুল এবং বিভিন্ন হাতের কাজের সামগ্রী বিক্রী হত। এখন সেসবের তেমন কোনও চাহিদা না থাকলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ফিরেছে কিছুটা আধুনিকতা। বিশেষ করে ফাস্ট ফুড ও প্রসাধনী জিনিসের দোকানই বেশি। তবে রয়েছে নাগর দোলা সহ শিশুদের মনোরঞ্জনের একাধিক ব্যবস্থা।
চোপড়া থানার আইসি হেমন্ত কুমার শর্মা, ডিএসপি,ডিইবি ধ্রুব প্রধান আজকে মেলা পরিদর্শন করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ,মেলা উপলক্ষে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। আজকে মেলার বিভিন্ন দোকানপাট সহ মন্দির পরিদর্শন করেন চোপড়া থানার আইসি সহ ডিএসপি,ডিইবি ধ্রুব প্রধান।