কলকাতা: ‘শত্রুর শত্রু, আমার মিত্র’ কিংবা রাজায় রাজায় লড়াই হয়, উলখাগড়ার প্রাণ যায়! বহুল ব্যবহারে জীর্ণ এমনই সব প্রবাদ বাক্য উঠে আসছে তৃণমূল কর্মীদের ঘরোয়া আলোচনায়৷
সৌজন্যে, হাওড়ার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল বদলের ঘটনা৷ ন’মাসের মাথায় ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন রাজীব৷ কলকাতা বা এরাজ্যের কোনও স্থান নয়, তৃণমূলে ফিরেছেন ত্রিপুরা থেকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে৷ আর সেখানেই আপত্তি জানিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলছেন নিচু তলার কর্মীরা৷
তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত ২৩ অক্টোবর খড়দহের সভা থেকে নেত্রীর কাছে কাতর আর্জি জানানোর কথা প্রকাশ্যে এনে অভিষেক জানিয়েছিলেন, ‘গদ্দারদের আর দলে ঢোকাবেন না৷’ দাবি করেছিলেন, ‘যাঁরা ইতিমধ্যে দলে ঢুকেছেন, তাদের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে৷’ ভরসা জোগাতে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘‘এবারের তৃণমূল আগের তৃণমূলের মধ্যে পার্থক্য আছে। আলাদা তৃণমূল এটা।”
কাকতালীয়ভাবে সাতদিনের ব্যবধানের আরেক শনিবার ত্রিপুরায় সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকেই নতুন করে তৃণমূলে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে ‘দলবদলু’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ তারপরই কর্মীদের ঘরোয়া আলোচনায় উঠে আসছে, ওই প্রবাদ৷ কর্মীরা বলছেন, ‘‘তাহলে কি সবটাই আইওয়াশ! ভোটের কথা মাথায় রেখেই কি দলীয় কোন্দল সামলাতে তখন একথা বলেছিলেন নেতারা?’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য বলছেন, রাজীবকে নিয়ে এমন আলোচনা হওয়াটা স্বাভাবিক৷ কারণ, বিজেপিতে থাকা কালীন এই ন’মাসে তিনি সবচেয়ে বেশি আক্রমণ শানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে৷ তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন নেত্রীকে উদ্দেশ্য করেও৷ স্বাভাবিকভাবেই, রাজীবের দলবদল নিয়েও আলোচনা হবে৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেটাও গা সওয়া হয়ে যাবে- এটা বিলকুল জানেন নেতৃত্বরা৷ তাই দল এবিষয় নিয়ে বেশি ভাবিত নয়৷ বরং, বিজেপিকে আরও দুর্বল করে দেওয়াটাই ওই শিবিরের লক্ষ্য, অভিমত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের৷ -ফাইল ছবি