কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদে কর্মী নিয়োগ নিয়ে চরম দুর্নীতির অভিযোগ৷ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্তের পক্ষে সওয়াল করে রাজ্য সরকার৷ বলা হয় তিনজন বিচারপতিকে নিয়েও কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷ সিবিআই ছাড়া অন্য কোনও সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের আর্জিও জানানো হয় রাজ্যের তরফে৷ কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত৷ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যা বলেন, এই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধান ছাড়া কোনও উপায় নেই৷
আরও পড়ুন- আগে কলকাতা-হাওড়ায় ভোট কেন? আদালতে হলফনামায় জানাল রাজ্য
এর আগেও সিবিআই-কে তদন্ত করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেছিল হাইকোর্ট৷ কিন্তু আজ তদন্তের নির্দেশ দিল৷ ‘দুষ্কৃতীর কোনও রাজনৈতিক দল হয় না৷ তাঁরা দুষ্কৃতীই হয়৷ দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় নেয়৷ আমি কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতার বিরুদ্ধে নই৷ যাঁরা দুর্নীতিতে যুক্ত তাঁদের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে৷ প্রশাসনের যে পদেই থাকুন না কেন তাঁকে বহিষ্কার করতে হবে৷’ গ্রুপ ডি পদে কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় এমনই মন্তব্য করলেন বিচারপতি৷
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে এসএসসি’র জারি করা আসল সুপারিশ পত্র নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি৷ পর্ষদের হলফনামায় বলা হয়, আসল সুপারিশপত্র নেই৷ সেটা কী ভাবে সম্ভব?হতবাক হাইকোর্ট৷
সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে এদিন আদালতে এসএসসি-র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক পর্যবেক্ষণও তুলে ধরেন তিনি। তা শোনার পর বিচারপতি বলেন, “আপনার বক্তব্য পেশ করার জন্য পাঁচ মিনিট সময় দেব। আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না যে আপনারা মামলায় হেরে গিয়েছেন। আপনাদের হলফনামা থেকে এটা স্পষ্ট যে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি। আমি তদন্তের জন্য সিবিআই-কে ঠিক করে নিয়েছি।”
আজ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যখন হলফনামা দেয়, তাতে হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে নির্দিষ্ট সুপারিশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার আসল কপি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ এর পরেই বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট৷ তাহলে এতজনের নিয়োগ কী ভাবে হল? কারণ যোগ্যতার নিরিখে সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে৷ এখানে নিয়োগ হয়েছে৷ কিন্তু নিয়োগের সুপারিশ পত্রটাই নেই৷ এর পরেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ এজি আদালতের কাছে অনুরোধ করেন, সিবিআই দেবেন না। রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা করতে পারেন৷ রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই৷ সিবিআই তদন্ত একটা সময় গিয়ে থেমে যায়।” কিন্তু বিচারপতি বলেন, “ এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক রয়েছে৷ তাই রাজ্যের কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো যাবে না।”