কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে নিম্নচাপ, প্রতিরোধে প্রায় সব ব্যবস্থা সম্পন্ন

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে নিম্নচাপ, প্রতিরোধে প্রায় সব ব্যবস্থা সম্পন্ন

3427e73c1613352d5ec6fdcfbc609a21

কলকাতা : হাতে মাত্র আর কয়েকঘণ্টা। তারপরই  ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’। দুর্যোগের আশঙ্কা বাংলাতেও । শনি এবং রবিবার ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাতায়াতের ক্ষেত্রে জারি নিষেধাজ্ঞা। দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ঘন্টায় ৩৬ কিলোমিটার গতিবেগে এগোচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর ‘জাওয়াদে’র অভিমুখ হবে উত্তর-পশ্চিম দিকে।

শনিবার সকালে এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ অথবা ওড়িশা উপকূলে পৌঁছবে। সেখান থেকে আবার গতিপথ পরিবর্তন করবে। এবার অভিমুখ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক। শনিবার দুপুরের পর এটি প্রথমে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পরে ওড়িশা উপকূল বরাবর এগোবে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলায় বৃষ্টি এবং উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা।

শুক্রবার সকাল থেকে দুই মেদিনীপুর এবং দুই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আংশিক মেঘলা আকাশ। দাপট বেড়েছে পূবালী হাওয়ার। ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। সুন্দরবনের একাধিক উপকূল তীরবর্তী এলাকায় সকাল থেকেই স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে মৎস্য দপ্তর। সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনকে ইতিমধ্যেই রাতের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়  যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাবে রাজ্যে যে দুর্যোগ আবহাওয়ায় হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন ফ্লাড সেন্টার ও স্কুল গুলিকে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

করোনার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন  সেন্টার ও স্কুলগুলি ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্যানিটাইজিং করার কাজ ইতিমধ্যেই প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে শুকনো খাবারের। শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপ ও নামখানাতে এসে পৌঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবারের খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও । দুর্যোগ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন । ঘূর্ণিঝড়ে জাওয়াদের কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এই অসময়ের বৃষ্টিতে প্রচুর শস্য , সবজি ও ফুলের  ক্ষতি হতে পারে। শুক্রবারের মধ্যে ধান কাটার ব্যবস্থা করেছে বহু কৃষক। এদিকে, ঝড়বৃষ্টির জেরে ফের ধাক্কা খেল শীত। শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  বাতাসে জলীয় বাষ্পের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯৪ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *