ক্যানিং: ইয়াসের পর এবার চৌকাঠে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে কপালে চিন্তার ভাঁজ কৃষকদের। আবারও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা৷ কারণ, ইতিমধ্যেই হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, জাওয়াদের ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়ো হাওয়া৷ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে৷
ইতিমধ্যেই মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । পাশাপাশি ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ধান সহ বিভিন্ন ধরণের মরসুমি সবজি ও ফুল। তাই দুশ্চিন্তায় এখন থেকে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেলার সকল প্রান্তের কৃষকরা। সাধারণত শীতে সবথেকে বেশি বিভিন্ন ধরণের সবজি সহ ধান চাষ করে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষজন।
অকাল বৃষ্টির জেরে তা ক্ষতি হতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করছে চাষিরা। ফসলকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে তড়িঘড়ি মাঠ থেকে ফসল তুলে নিচ্ছে কৃষকরা। সাধারণত এই সময় আমন ধানের চাষ করা হয় ডায়মন্ড হারবার, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, রায়দিঘি ,কুলপি, ক্যানিং, সাগর ,নামখানা, গোসাবা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলগুলিতে। তাই কার্যত মাঠেই পড়ে রয়েছে বিঘের পর বিঘে ধান।
বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সহ একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে উপকূল তীরবর্তী এলাকার কৃষকদের। সেই ক্ষত এখনও দগদগে। একটু একটু করে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল কৃষকরা। আবারো ঘূর্ণিঝড়ের সাথে বৃষ্টির ভ্রূকুটিতে কৃষকদের আশঙ্কা পাকা ধানে মই দিতে পারে জাওয়াদ। সাধারণত অগ্রায়ন থেকে পৌষ মাস আমন ধানের চাষ করা হয়। এখন মাঠ থেকে নবান্ন বাড়ি তুলে নেওয়ার পালা। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে । তাছাড়াও ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে অন্য বিভিন্ন মোরসুমী ফসল চাষের পাশাপাশি ২০ কুড়ি হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন রকমের ফুল চাষও হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির জেরে ধান থেকে ফসল ও ফুলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।