চিন: কী আশ্চর্য! জিরাফের থেকে উচ্চতায় বেশি লম্বা নাকি গন্ডার, এও সম্ভব! সম্প্রতি এমনটাই দাবি করলেন চিনের একদল গবেষক৷ তাঁদের দাবি, তাঁরা গন্ডারের এমন ফসিল খুঁজে পেয়েছেন, যেটি উচ্চতায় জিরাফের চেয়ে বেশি লম্বা।
শুক্রবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে গাংসু প্রদেশে এই গন্ডারের ফসিলটির হদিশ পাওয়া গিয়েছে৷ এই ফসিলটি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি প্যারাসেরাথেরিয়াম লিনজিয়ানসের ফসিল। এই বিশাল উচ্চতার প্রাণীটি প্রায় ২৩ ফুট লম্বা। প্রাণীটি এতটাই লম্বা যে, এর মাথা রীতিমতো গাছ ছাড়িয়ে যায়। আজ থেকে আড়াই কোটি বছরেরও আগে এই প্রাণী ভারতীয় উপমহাদেশ ও চিনের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াত। এর ওজন ২১ টন, যা চারটি আফ্রিকান হাতির সমান। তবে এখনকার গন্ডারের যেমন নাকের ওপর শিং থাকে, এদের তা ছিল না৷
২০১৫ সালে চীনের গাংসু প্রদেশের ওয়াংজিয়াচুয়াং গ্রামের পাশে বিশাল এই ফসিলের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই থেকে এই ফসিলটি নিয়ে গবেষণা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতিবার কমিউনিকেশনস বায়োলজি নামক জার্নালে গবেষণার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পরই এই খবর প্রকাশ্যে আসে। গাংসু প্রদেশ থেকে খুঁজে পাওয়া ফসিলটির মাথার খুলি ও চোয়াল পরীক্ষা করে গবেষকেরা বলছেন, এই গন্ডারের মাথা বেশ সরু ও লম্বাটে ছিল। এই ফলিসটি খুঁজে পাওয়ার পর এনিয়ে গবেষণা করতেই বর্তমানে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা কে, তা নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেই মনে হচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলের।
বেইজিংয়ের ইনস্টিটিউট অব ভার্টেব্রেট প্যালিওনটোলজি অ্যান্ড প্যালিওনথ্রোপলজির গবেষক ড. দেং তাও জানান, বহু যুগ আগে ভারতীয় উপমহাদেশে বিশেষ করে পাকিস্তানের এক প্রকাণ্ড আকারের গন্ডারের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া স্তন্যপায়ী প্রাণীটির ফসিলের সাদৃশ্য রয়েছে। এর থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে, প্রাণীটি মধ্য এশিয়ার ভিতর দিয়ে বিশাল এলাকা ঘুরে চিনের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছেছিল। গন্ডারটি তিব্বতের মালভূমি ও নিচু এলাকার ক্রান্তীয় আবহাওয়া পছন্দ হওয়ায় প্রকাণ্ড এই গন্ডার সেখানেই থাকত।