কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কমিটিতে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, বিরোধী দলনেতা এবং মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান বা কোনও প্রতিনিধি। তবে শুভেন্দু অধিকারীর এই কমিটিতে থাকা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। মামলাকারীরা অনেকেই দাবি করেছিলেন যে তিনি থাকলে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হবে মেলা নিয়ে। সেই প্রেক্ষিতেই নতুন কমিটি গঠন করেছে আদালত, যেখানে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির সদস্য সচিব। এখন কমিটি থেকে শুভেন্দুর বাদ পড়ার বিষয়টিকে ‘নৈতিক জয়’ হিসেবে দেখছে রাজ্য সরকার।
আদালতে এই কমিটির ইস্যুতে দাবি করা হয়েছিল একটি কমিটি ২০০১ সালে তৈরি হয়েছিল আগত পুরণার্থীদের যাতে কোন সমস্যা না হয় সে কারণে। রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী (ভাইরালজিস্ট) বা অন্য কোনও চিকিৎসক নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু আদালত সেই দাবি মানেনি ঠিকই তবে নয়া কমিটি থেকে বাদ দিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যের মনে হচ্ছে নৈতিকভাবে তারা জয় পেয়েছে কারণ বিরোধী নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। এমনিতেই অনেক ইস্যুতে হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। এবার এই কমিটির ব্যাপারেও যদি বিজেপি নেতাকে সরানো না হত তাহলে হয়তো নবান্ন আরও চাপে পড়ত। তবে আদালতের সিদ্ধান্তে সেই চাপ থেকে মুক্ত তারা। উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের সাফ নির্দেশ, টিকার দুটি ডোজ সম্পন্ন হলে এবং তার শংসাপত্র থাকলে তবেই সাগরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। আগত পুণ্যার্থীরা টিকার দু’টি ডোজ নিয়েছেন কি না, তা নিশ্চত করার দায়িত্ব বর্তাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের মুখ্যসচিবের উপরে৷
মেলা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, মেলায় যাওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই সাগরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এই সকল শর্তগুলি যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখবে এই কমিটি। একই সঙ্গে আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, গোটা সাগর দ্বীপকে ‘নোটিফাইড’ জোন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। হাই কোর্টের দেওয়া শর্তগুলি সঠিক ভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করবেন মুখ্যসচিব।