কলকাতা: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এবার পৌঁছল হাইকোর্টের দরজায়৷ অবিলম্বে রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার৷ অভিযোগ, সংবিধান বহির্ভূত কাজ করছেন রাজ্যপাল৷ নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছেন৷ মামলাকারীর প্রশ্ন, কী ভাবে এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সরকারি কাজে বাধা দেন রাজ্যপাল? এই মামলায় রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিকেও পার্টি করা হয়েছে৷ শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানির হবে বলে সূত্রের খবর৷ মামলার সব পক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে৷
আরও পড়ুন- আবাসনের হ্যান্ডসম, মিশুকে ছেলেটাই জঙ্গি! তাজ্জব বাসিন্দারা
রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একাধিক ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজভবন৷ সরকারি নীতির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল৷ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানানো হয়েছে৷ সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে৷ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করা হয়েছে। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কাজে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছে রাজ্যপাল। মামলাকারীর বক্তব্য, একজন রাজ্যপালের কাছ থেকে এই ধরণের আচরণ একেবারেই কাম্য নয়৷
রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্কের তিক্তটা এতটাই বেড়েছে যে রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী চলতি বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবিষয়ে সরাসরি আবেদন জানানো হয়েছে৷ এদিকে মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের দাবি, সংবিধানের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রের মতো আচরণ করেছেন রাজ্যপাল৷ মামলাকারীর মতে, রাজ্যপাল পদের একটা আলাদা ওজন রয়েছে৷ এই পদের একটি গৌরব আছে। এটি একটি সম্মানীয় পদ৷ যিনি এই আসনে বসেন তাঁর ‘ডিগনিটি’, আলাদা হওয়া উচিৎ। অথচ বর্তমান রাজ্যপাল প্রতি ক্ষেত্রে যেভাবে টুইট করছেন কিংবা সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন তা এই পদের গৌরবকে আঘাত করছে৷
প্রসঙ্গত, রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর কথায়, “উনি প্রতিদিন একটা করে টুইট করে কখনও আমাকে, কখনও আমার অফিসারদের গালাগালি করছেন। অসাংবিধানিক কথাবার্তা বলছেন। আমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন। আমরা কি বন্ডেড লেবার? রাজ্যপালের কেনা গোলাম? তিনি এখন সুপার পাহারাদার। প্রতিদিন ওঁর টুইট দেখে আমার বিরক্ত লাগে। উনি এমন এমন টুইট করেন যা অমানবিক। তাই ব্লক করলাম। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”