স্বাস্থ্যসাথী থেকেও প্রত্যাখ্যান! ১৪ ঘণ্টা ধরে ঘুরেও মিলল না চিকিৎসা, পথেই মৃত্যু বৃদ্ধের

স্বাস্থ্যসাথী থেকেও প্রত্যাখ্যান! ১৪ ঘণ্টা ধরে ঘুরেও মিলল না চিকিৎসা, পথেই মৃত্যু বৃদ্ধের

cfff41c1f19b6b4740649d54c10675f6

দুর্গাপুর: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখেই মুখ ফেরাল একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল৷ সরকারি হাসপাতালে মিলল না পরিকাঠামো৷ প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে পাঁচ হাসপাতাল ঘুরেও মিলল না চিকিৎসা৷ পথে পড়ে থেকেই মৃত্যু হল দুর্ঘটনায় জখম বৃদ্ধের৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় দুর্গাপুরের জব্বর পল্লীতে৷ প্রতিবাদে মৃতদেহ রাস্তায় ফেরে রেখে পথ অবরোধ করেন মৃতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা৷ এই ঘটনা আরও একবার প্রশ্ন চিহ্নের মুখে ফেলল চিকিৎসা ব্যবস্থাকে৷ 

আরও পড়ুন- বিধানসভায় এলেও ভাতা পাবেন না শুভেন্দু! কিন্তু কেন?

দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জব্বরপল্লির বাসিন্দা নির্মল মণ্ডল (৬২) পেশায় ব্যবসায়ী৷  দুর্গাপুরের আশীষ মার্কেটে একটি ঘড়ির দোকান রয়েছে তাঁর৷ শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন৷ সেই সময় লালবাগগামী একটি বাইক দ্রুতবেগে  ছুটি এসে ধাক্কা মারে তাঁকে৷ গুরুতর আহত হন নির্মল মণ্ডল৷ মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি৷ তড়িঘড়ি তাঁকে দুর্গাপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পরিবারের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, নির্মলবাবুর চোট গুরুতর৷ ওই হাসপাতালে চিকিৎসা সম্ভব নয়৷ তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷  

নির্মলবাবুর ছেলে রণজয় মণ্ডল জানান, জখম অবস্থায় দুর্গাপুর সাব ডিভিশন হাসপাতাল থেকে বাবাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান তাঁরা৷ কিন্তু সেখানেও চিকিৎসা মেলেনি বলে দাবি৷ চোট গুরুতর হওয়ায় তাঁকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে৷ কিন্তু নির্মলবাবুর পরিবার তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসেননি। বদলে  বর্ধমানেরই অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখেই তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়৷ সেখান থেকে গুরুতর আহত নির্মল মণ্ডলকে দুর্গাপুর ফিরিয়ে আনেন তাঁরা৷ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়৷ কাঁকসার দু’টি মেডিক্যাল কলেজ-গৌরীদেবী ও সনকা যান তাঁরা। সেখানেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখান। কিন্তু, বেড নেই বলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ এই টানাপোড়েনের মাঝে তখন সন্ধে গড়িয়ে গভীর রাত৷ অবশেষে রাত তিনটে নাগাদ লড়াই শেষ হয় নির্মল মণ্ডলের৷ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর৷ 

অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের কথা শুনে একদিকে যেমন বেসরকারি হাসপাতাল রোগী ভর্তি নিতে চায়নি, তেমনই পরিকাঠামোর অভাবে চিকিৎসা মেলেনি সরকারি হাসপাতালে। তাহলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মূল্য কোথায়? উঠেছে প্রশ্ন৷