কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর রহস্যমৃত্যু, সুইসাইড নোটে বিস্ফোরক দাবি

কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর রহস্যমৃত্যু, সুইসাইড নোটে বিস্ফোরক দাবি

e1dc52a3155c26b5de23f156fdbe6908

পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার ঝালদার কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর রহস্যমৃত্যু৷ বুধবার সকালে উদ্ধার হল নিরঞ্জন বৈষ্ণব ওরফে সেফালের  ঝুলন্ত দেহ৷ তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও৷  উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷

আরও পড়ুন- একদিনে আক্রান্ত বাড়লেও স্বস্তি বহাল, বঙ্গ আজও মৃত্যু শূন্য

আদালতের নির্দেশে কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ এরই মধ্যে মৃত্যু প্রত্যক্ষদর্শীর৷ তপন কান্দুকে দীর্ঘ দিন ধরেই চিনতেন নিরঞ্জন৷ চোখের সামনে তপনকে খুন হতে দেখেছিলেন৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় শিক্ষক নিরঞ্জন প্রতিদিন সকাল সকালই ঘুম থেকে উঠে পড়ে টিউশন পড়াতেন৷ কিন্তু এদিন সকাল থেকেই দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে৷ ঘর থেকে না বেরনোয় তাঁকে ডাকতে যান পরিবারের সদস্যরা৷ ঘর খুলতেই দেখেন শেফালের ঝুলন্ত দেহ৷ 

গত ১৩ মার্চ বিকেলে হাঁটতে বেরিয়ে খুন হন তপন কান্দু৷ দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর৷ সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন যাদব রজক, শেফাল ওরফে নিরঞ্জন বৈষ্ণব, সুভাষ কর্মকার, প্রদীপ চৌরাশিয়া ও সুভাষ গড়াই নামে পাঁচ সঙ্গী।   

নিরঞ্জনবাবুর দাদা জানান, তপন কান্দু খুনের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন তাঁর ভাই শেফাল। তপন খুন হওয়ার পর থেকেই বারবার শেফালকে ডেকে পাঠাত পুলিশ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হত৷ মানসিক ভাবে যন্ত্রণা দিচ্ছিল পুলিশ৷ সেই কারণেই তাঁর ভাই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নিরঞ্জনবাবুর দাদার দাবি৷ তপন কান্দু খুনে প্রথম থেকেই পুলিশের দিকে আঙুল উঠেছে৷ অভিযোগ, থানার আইসি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য বারবার তবন কান্দুকে চাপ দিতেন৷ এবার আরও বড় অভিযোগ তুলল নিরঞ্জনবাবুর পরিবার।

কংগ্রেসের দাবি, বারবার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল নিরঞ্জনকে৷ বিশেষত সিবিআই তপন কান্দু খুনের তদন্তভার নেওয়ার পর থেকেই শাসক দলের তরফে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে দাবি৷ এদিন সকালে শেফালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ঝালদা থানার  পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। 

শেফালের ঘর থেকে যে সুইসাইড নোটটি পাওয়া গিয়েছে তাতে লেখা রয়েছে, “যেদিন তপনের হত্যা হয় সেদিন থেকে আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি। যে দৃশ্যটি দেখেছি মাথা থেকে কোনওরকম বার হচ্ছে না। ফলে রাতে ঘুম হচ্ছে না। খেতে মন যাচ্ছে না। শুধু ওই ঘটনাটাই মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তারপর পুলিশের বারবার ডাক। আমি জীবনে থানার চৌকাঠ পার করিনি। এই সব আমি আর সহ্য করতে না পারার জন্য আমি এই পথ বেছে নিলাম। এতে কারও কোনওরূপ প্ররোচনা, চাপ বা হাত নেই। আমি স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করলাম।” 

সুইসাইড নোট

এ দিকে, বুধবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বনধ শুরু হয়েছে পুরুলিয়ার ঝালদায়। তপন কান্দুর স্ত্রীকে হেনস্থা করার প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস।