কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য, তখন প্রাথমিকে পাঁচজনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা৷ আগামী ছ’ সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই পাঁচ প্রার্থীই ২০০৯ সালের টেট উত্তীর্ণ৷ কিন্তু, বিভিন্ন কারণে তাঁদের চাকরি আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ সেই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রয়োজনে আগের নিয়োগ তালিকা সংশোধন করে নতুন করে পদ সৃষ্টি করে এই পাঁচ প্রার্থীকে নিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন- তিন দফায় ৩৮৪ দিন, এসএসসি আন্দোলন ছাপিয়ে গেল কৃষক আন্দোলনকেও
২০০৯ এ টেট উত্তীর্ণদের প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতা চলছিল। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টর চক্কর কাটার পর প্রায় এক দশক পর ২০২১ সালে সেই জটিলতা কাটে। তারপর থেকে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ শুরু হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার শামীমা খাতুন সহ মোট পাঁচজনের গোরো তখনও কাটেনি৷ তাঁদের সকলেরই জমি হারা হিসেবে শংসাপত্র রয়েছে। সকলেই উত্তর ২৪ পরগনা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষায় তাঁদের প্রাপ্ত নম্বরের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও অনেকেই নিয়োগ পেয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন আইনজীবী অরিন্দম দাস।
ওই পাঁচ প্রার্থী যে চাকরি পাওয়ার অধিকারী, তা প্রমাণ করতে যাবতীয় নথি তিনি আদালতে পেশ করেন। কিন্তু, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে যুক্তি ছিল, তাঁরা যে এক্সামটেড ক্যাটাগরি বা জমি হারা হিসেবে বিশেষ শ্রেণীভুক্ত, তার কোন প্রমাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেখাতে পারেননি। ফলে নিয়োগ তালিকায় নাম রাখা যায়নি। এর পরেই মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম দাস নথি পেশ করে বলেন, বিশেষ শ্রেণীভুক্ত হওয়াতেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাধারণ শ্রেণীর তুলনায় কম নম্বর পাওয়ার পরেও এই চাকরির পরীক্ষায় বোর্ড তাদের বসতে দিয়েছিল। যদি বোর্ড সেই শংসাপত্র না দেখে থাকতো, তাহলে তাঁরা পরীক্ষাতেই বসতে পারতেন না। আদালত সেই যুক্তি মেনে নিয়ে তাঁদের চাকরি দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
যদিও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে দাবি করা হয়, ৩৭০টি পদের মধ্যে একটি আসনও ফাঁকা নেই। সমস্ত পদ পূরণ হয়ে গিয়েছে। আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে বলে, যোগ্য হিসেবেই নির্দিষ্ট শ্রেণীর ভুক্ত হওয়ায় এবং সর্বনিম্ন যত নম্বর পাওয়া প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের চেয়ে প্রত্যেকেরই প্রাপ্ত নম্বর বেশি থাকায়, এই পাঁচজনকে নিয়োগের দায় বোর্ডের। প্রয়োজনে তালিকা আবার সংশোধন করে নতুন পদ তৈরি করতে হবে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>