কলকাতা: শীত যেতে না যেতেই গরম যেন খেলা দেখাতে শুরু করেছে। মৌসম ভবনের মতে মার্চ-এপ্রিলে যে তাপমাত্রা তা ১২২ বছরে ভারতে দেখা যায়নি। ভারতের তাপমাত্রার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ইতিমধ্যে হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, পঞ্জাব, রাজস্থান সহ একাধিক রাজ্যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে গিয়েছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি যদি এই অবস্থা হয় পরবর্তীতে তাপমাত্রার পারদ কোথায় পৌঁছবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে এ যাত্রায় প্রবল দাবদাহের হাত থেকে কিছুটা স্বস্তিতে পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যে রাজ্যে অস্বস্তিকর গরম দেখা দিয়েছে। তবে রাজ্যের কোথাও তাপপ্রবাহ দেখা দেয়নি।
আরও পড়ুন- আনিসের বাবা ক্ষমা না চাইলে দায়িত্ব থেকে সরবেন বিচারপতি! কী ঘটনা
মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, মার্চের শেষে যে তাপমাত্রা ছিল, গত ১২২ বছরে গ্রীষ্মের তাপমাত্রার সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০১০ সালের মার্চে তাপমাত্রা একটু বেশি ছিল। গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবারে সেই রেকর্ডও ভেঙে গিয়েছে। মার্চের ২০ তারিখে দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৯ যা রেকর্ড। হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, চণ্ডীগড়, রাজস্থানের প্রায় সর্বত্রই তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দেশে এত তাড়াতাড়ি কেন এত গরম পড়ল এই নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে একাধিক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমি ঝঞ্ঝা এসেছে, তবে কোনওটাই সেরকম জোরাল নয়। যার ফলে মার্চে দেশে সেভাবে বৃষ্টিপাত হয়নি। মূলত সেই কারণেই তাপমাত্রা এভাবে বেড়ে গিয়েছে।
বাংলাতেও অবশ্য সেভাবে কালবৈশাখী দেখতে পাওয়া যায়নি। সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। তবে তারপরেও প্রবল তাপপ্রবাহে বাংলাকে এখনও পুড়তে হয়নি। তবে বাংলাতে অস্বস্তিকর গরম শুরু হয়ে গিয়েছে। যেখানে গুজরাটের ভুজে শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সেখানে বাংলায় মেদিনীপুরের তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৪ ডিগ্রি। আলিপুরের তাপমাত্রা ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়ায়। শুধু শনিবার নয়, মার্চে একদিনের জন্যই রাজ্যের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস আতিক্রম করেনি। কিন্তু গত দুদশকের মধ্যেই মার্চে কলকাতার তাপমাত্রা একাধিকবার ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো রাঢ় এলাকায় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। কিন্তু চলতি বছর দেশের একাধিক রাজ্য যখন প্রবল তাপপ্রবাহে ফুটছে, বাংলার তাপমাত্রা সেখানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আলিপুর আবাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, যে উচ্চচাপ বলয় গরম হাওয়া পাঠায়, তার অবস্থান বর্তমানে আরবসাগরের দিকে। তাই এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহ দেখা যায়নি।