পেটের দায়! আফগানিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী এখন জার্মানির পিৎজা ডেলেভারি বয়

পেটের দায়! আফগানিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী এখন জার্মানির পিৎজা ডেলেভারি বয়

বার্লিন: এক সময় তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রী৷ তবে এখন তিনি লিপজিগ শহরের ডেলিভারি ম্যান৷ বাড়ি বাড়ি পিৎজা পৌঁছে দেওয়াই তাঁর পেশা৷ তবে তালিবানি হামলায় নয়, অন্য এক ভবিষ্যতের খোঁজে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেই দেশ ছেড়ে জার্মানি পাড়ি দিয়েছিলেন আবদু গনির মন্ত্রিসভার সদস্য সৈয়দ আহমেদ শাহ সাদাত৷

আরও পড়ুন- জলের দাম ৩ হাজার, ভাত মিলছে ৭ হাজারে, দুর্বিসহ কাবুল বিমানবন্দর

সম্প্রতি স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যম প্রাক্তন আফগান মন্ত্রীর ছবি ক্যামেরাবন্দি করে৷ সেখানে দেখা যায় পিঠে বড় ব্যাগ নিয়ে সাইকেলে চেপে পিৎজা ডেলিভারি করতে যাচ্ছেন তিনি৷ সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়ে যায়৷ আল জাজিরা আরাবিয়াও সাদাতের সাইকেল চালিয়ে পিৎজা সরবরাহ করার ছবি টুইট করে।  কমলা পোশাক গায়ে ৪৯ বছরের সাদাত বলেন, ‘‘এর মধ্যে অপরাধ বোধের কিছু নেই৷ আশা করি আগামী দিনে অন্যান্য রাজনীতিবিদরাও একই পথ অনুসরণ করবেন৷ কারণ লুকিয়ে থাকার চেয়ে মানুষের সঙ্গে কাজ করা ভালো৷’’

sadat

তবে কেউ যদি মনে করে থাকে শিক্ষাগত যোগ্যতা কম বলেই এই পথ বেছে নিয়েছেন সাদাত, তাহলে খুবই ভুল হবে৷ কারণ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রযুক্তিবিদ্যায় ডবল মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত সংস্থায় ২৩ বছর ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা৷ এর মধ্যে প্রায় ১৩টি দেশের বিভিন্ন সংস্থায় উচ্চপদে কাজ করেছেন গনি জমানার এই মন্ত্রী৷ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের প্রযুক্তি মন্ত্রকের পরামর্শদাতা ছিলেন তিনি। তখন অবশ্য প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ছিলেন না৷ ২০১৮ সালে আশরাফ গনির ক্যাবিনেটে প্রযুক্তি মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেন৷ কিন্তু সরকারের সঙ্গে মত পার্থক্যের জেরে ইস্তফা দিয়ে দেন৷ এর পরেই দেশ ছেড়ে জার্মানিতে চলে আসেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- ভারত যেন নাক না গলায়! মোদীর দাবির পাল্টা দিল তালিবান

কিন্তু এই কাজ কেন?  সাদাত বলেন, ‘‘এশিয়া ও আরবে ধনী ব্যক্তিদের কাছে আমার জীবনের গল্প অনুঘটকের মতো কাজ করবে। এটাই আশা করব৷ এই সাদামাটা জীবনযাত্রা এশিয়া ও আরবের ক্ষমতাশালীদের সঙ্গে মেলালে চলবে না।’’ তালিবান আফগানিস্তান দখল প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এত তাড়াতাড়ি গনি সরকারের পতন হবে, ভাবতে পারিনি৷ সাদাত জানিয়েছেন, দেশ ছাড়ার পর যে সঞ্চিত অর্থ সঙ্গে করে এনেছিলেন, তা ক্রমেই ফুরিয়ে আসছিল৷ এরপরই তিনি লিভ্রান্ডো সংস্থার হয়ে খাদ্য সরবরাহের কাজ শুরু করেন৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *