শিলিগুড়ি: অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। না হলে অন্যায় প্রশ্রয় পেয়ে যাবে। সমাজকে এমনই বার্তা দিলেন শিলিগুড়ির ‘চির যুবক’ অমলেন্দু সুর। ৯২ বছরের এই বৃদ্ধের অসম্ভব মনের জোর , অসীম সাহসের জন্য তাঁকে বিশেষ সম্মান দিলেন পুলিশ কমিশনার। ‘সম্মানের বাড়ি’-র সদস্যপদ পেলেন তিনি।
এই পুরস্কার পেয়ে আপ্লুত অমেলন্দু সুর। তিনি বলেন, আমি বরাবর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এসেছি। সকলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। বৃদ্ধের প্রশংসায় আগেই মুখর হয়েছিল শিলিগুড়ি পুলিশ। শিলিগুড়ি থানায় আইসি এই বৃদ্ধ দম্পতিকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শুধু এটুকু তে সন্তুষ্ট হতে পারেন না, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা। পুলিশ কমিশনার তরফে প্রশংসাপত্র সহ নগদ পুরস্কারের টাকা অমলেন্দু বাবুর হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা সম্মানের বাড়ির –সদস্যপদ দেন। পাশাপাশি যে কোনও সমস্যায় বৃদ্ধের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। স্ত্রীকে নিয়ে শিলিগুড়ি পোস্ট অফিসে গিয়েছিলেন অমলেন্দু সুর। সেখান থেকে বেরিয়ে কাছারি মোড়ে স্ত্রীকে অপেক্ষা করতে বলে বাথরুমে যান। সেই সময় এক যুবক তাঁর স্ত্রী শিল্পীরানির কাছে আসেন। নানা অছিলায় তাঁর কাছ থেকে সোনার চেন হাতিয়ে নেন। অমলেন্দু বাবু ফিরে এসে দেখেন স্ত্রীর গলা ফাঁকা। জিজ্ঞাসা করতেই শিল্পীরানি তাঁকে সব কথা খুলে বলেন। এরপর অমলেন্দুবাবু ওই ছিনাতাইবাজকে খুঁজতে থাকেন। ভেনাস মোড়ের কাছে তিনি সেই ছিনতাইবাজের খোঁজ পান। তাঁর স্ত্রী ওই ছিনতাইবাজকে শনাক্ত করে। ওই ছিনতাইবাজের কলার চেপে ঘুঁষি চালাতে থাকেন ৯২ বছরের যুবক। হতবম্ব হয়ে যান ছিনতাইকারী। আশেপাশে লোক জমা হয়ে যায়। তাঁরা ছিনতাইকারীকে মারতে উদ্যোত হন। কিন্তু অমলেন্দু বাবু উত্তেজনার বশে আইন কাউকে নিজের হাতে তুলে নিতে দেননি। তিনি পুলিশে খবর দেন।
বৃদ্ধের সাহসে মুগ্ধ শহরবাসী। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, তিনি শিলিগুড়ির যুব সমাজের ইন্সপিরেশন। তাঁকে হিরো বলে আখ্যা দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ।