দুয়ারে বিরিয়ানি! কী ভাবে শুরু হল এই উদ্যোগ? জানুন ‘বিরিয়ানি কাকু’র গল্প

দুয়ারে বিরিয়ানি! কী ভাবে শুরু হল এই উদ্যোগ? জানুন ‘বিরিয়ানি কাকু’র গল্প

হাওড়া: দুয়ারে বিরিয়ানি! না এটা কোনও সরকারি প্রকল্পের নাম নয়৷ বলা ভালো ব্যক্তিগত উদ্যোগ৷ এক ফোনেই এবার বাড়ির দোরাগোড়ায় হাজির হবে বিরিয়ানির হাড়ি৷ আর এর জন্য আপনার খরচ হবে মাত্র ৬০ টাকা!  

 

 

 

আরও পড়ুন- বিনা ওয়ারেন্টে বিরোধী দলনেতার অফিসে তল্লাশি, হাই কোর্টের দ্বারস্থ শুভেন্দু

 

হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকার বাসিন্দা বিধান চক্রবর্তীর এই উদ্যোগকে সাধুবার জানিয়েছে এলাকার মানুষ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে ঝড়ের গতিতে৷ সায়ন্তন প্রামাণিক নামে এক ফুড ব্লগার প্রথম এই খবরটি শেয়ার করেন৷ এর পর থেকেই আলোচনায় বিধানের বিরিয়ানির দোকান৷ ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বিভিন্ন ফুড-ডেলিভারি অ্যাপ যখন মানুষের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, সেই সময় এই দুয়ারে বিরিয়ানি উদ্যোগকে প্রতিষ্ঠা করা ছিল সত্যই চ্যালেঞ্জ৷  কঠিন প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় সেই চ্যালেঞ্জকে সফল ভাবেই গ্রহণ করেছেন বিধান৷ শ্যামপুর থানার আশেপাশের এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তাঁর ‘দুয়ারে বিরিয়ানি’৷ 

বিরিয়ানি

মাত্র ৬০ টাকায় মিলবে ডিম, চিকেন এবং বড় সাইজের আলু দেওয়া বিরিয়ানির প্লেট৷ শুধু একটা ফোনের অপেক্ষা৷ একেবারে বাড়ির দরজায় এসে হাজির হবে খাবার৷ বাইকের পিছনে বিরিয়ানির হাড়ি নিয়ে প্রতিদিন পথে বেরিয়ে পড়েন বছর ৪৫ এর বিধান৷ তাঁর ফোন নম্বরে ফোন করলেই বাড়িতে সামনে হাড়ি নিয়ে হাজির হন তিনি৷ পথ চলতি মানুষের কাছেও কদর রয়েছে তাঁর বিরিয়ানির৷ হবে নাই বা কেন? এত কম দামে সুস্বাদু বিরিয়ানি তো আর অন্যত্র মিলবে না৷ বিধানের বিরিয়ানি শেষও হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ প্লেট বিরিয়ানি নিয়ে বিকেল পাঁচটায় বেরন তিনি। দোকানের তুলনায় তাঁর বিরিয়ানির দাম অনেকটাই সস্তা হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি তা ফুরিয়ে যায়। 

কী ভাবে মাথায় এল এই অভিনব উদ্যোগ? বিধান বলেন,  “আমি ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিই। বাংলায় দুয়ার মানে দরজা, তাই এই নাম।” এছাড়াও বিধান জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন অনুগামী৷ রাজ্য সরকারের প্রকল্প দুয়ারে সরকার থেকেও তিনি অনেকটাই অনুপ্রাণিত৷ 

একসময় পেশায় পুরোহিত ছিলেন বিধান৷ পুজোর কাজে রাজস্থানেও গিয়েছিলেন৷ সেখানে তিনি দেখেছিলেন রাস্তার ধারে সস্তায় খাবার মেলে৷ সেটাও তাঁর মাথায় ছিল৷ তিনি মানুষের কাছে পকেট বান্ধব খাবার পৌঁছে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করেন৷ তাঁর কাছে আইডিয়া তো ছিল, কিন্তু পুঁজি ছিল না৷ ফলে বেশ কিছু সময় তাঁকে অর্থ সঞ্চয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়৷ আর তার পরেই সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে শুরু হয় তাঁর দুয়ারে বিরিয়ানি৷ সকাল থেকেই বিরিয়ানি তৈরির কাজ শুরু করে দেন বিধান ও তাঁর স্ত্রী৷ বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হয় দোকান৷ ৯টার মধ্যে সবটাই শেষ৷ হাড়িতে পড়ে থাকে না একটাও চাল৷ 

মাত্র দেড় বছর হয়েছে তাঁর এই উদ্যোগ৷ এত কম সময়ের মধ্যেই তা স্থানীয় মানুষের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে৷ তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বিরিয়ানি কাকু’৷ বিধানের কথায়, ‘বাম্পার সেল হচ্ছে৷’