কলকাতা: উপযু্ক্ত নম্বর থাকার পরেও মেধাতালিকায় পিছিয়ে গেল তাঁর নাম। অথচ অনেক কম নম্বর থাকার পরেও মন্ত্রীর মেয়ের নাম সবার শীর্ষে এল সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের মেয়ে ববিতা সরকার। ইতিমধ্যে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নামার জন্য তিনি প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। যদি তিনি জানিয়েছেন, কোনও মন্ত্রী বা তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন না। তিনি নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন। তবে তিনি কী করে বুঝলেন, মেধা তালিকায় বিশাল গড়মিল হয়েছে?
ববিতা সরকার বলেন, ‘উনি ইন্টারভিউ দিয়েছেন কি দেননি, সেটা আমি জানতাম না। আমি দেখেছিলাম, মেধা তালিকায় প্রথমে ৭২ জনের নাম ছিল। হঠাৎ করে মেধাতালিকায় শীর্ষে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম চলে আসে। তারপর মেধা তালিকায় ৭৩ জনের নাম চলে আসে। তখন থেকে আমার সন্দেহ শুরু হয়।’ তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে যখন তালিকা প্রকাশ পায়, তখন থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম, কোথাও একটা গণ্ডোগল হয়েছে। কিন্তু কমিশন তখনও নম্বর বিভাজন দেয়নি। তাই গণ্ডোগলটা কোথায় সেটাই বুঝতে পারছিলাম না।’
তিনি বলেন, ‘যেদিন মেধা তালিকা বদল হয়, তার তিন দিন পর থেকে শুরু হয় আমার লড়াই। সেই সময় আমার সন্তানের ১০ মাস বয়স ছিল। আরটিআই করেছি, কমিশনে গেছি, স্থানীয় নেতাদের কাছে গেছি। কিন্তু কেউ আমার হয়ে কোনও কথা বলেনি। পঞ্চম কাউন্সিলিংয়ে ডাক পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ডাক পেলাম না। আদালতের দ্বারস্থ না হওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। আমি যদি আদালতের দ্বারস্থ না হতাম, চাকরিটাও পেতাম না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিলাম। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করি। এই লড়াইয়ে আদালত যেভাবে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে তাতে আমি খুশি। ‘
আদালতে বিচারপতি বলেন, শিক্ষক হল সমাজের মেরুদণ্ড। কিন্তু অঙ্কিতার হাত ধরে যে নমুনা তৈরি হল, তা সমাজের জন্য কলঙ্ক। তিনি কী কখনও কাউকে ন্যায় বোধের শিক্ষা দিতে পারবেন। পাশাপাশি বিচারপতি অঙ্কিতা অধিকারীর বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি এতদিন তিনি যা বেতন পেয়েছেন, তা দুই বারের কিস্তিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয় হয়েছে।