কলকাতা: শহরে একের পর এক আত্মহত্যা, মানুষের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছে। গত ১৫ দিনে পর পর তিন জন অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার সকালে দক্ষিণ কলকাতায় পাটুলির বাড়ি থেকে উঠতি মডেল ও অভিনেত্রী মঞ্জুষার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই শুক্রবার আরও আত্মহত্যার খবর উঠে এল। সল্টলেকে মা ও মেয়ের দেহ পাওয়া গিয়েছে নিজেদের বাড়ি থেকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে মা ও মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। দুটি দেহের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি সুইসাইড নোট।
বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ সূত্রে খবর। সল্টলেকের সিডি ব্লকের ১৭৫ নম্বর বাড়ি থেকে মা ও মেয়ের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নাম সুপর্না ঘোষ ও স্নেহা ঘোষ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ অনুমান করছে, বিষ খেয়ে দুজনে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির তিন তলা থেকে হু হু করে জল বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। সেই সময় প্রতিবেশীরা তাঁদের ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ভিতর থেকে তাঁরা কোনও সাড়া পাননা। তাঁরা কিছুটা ভয় পেয়ে যান। এরপরেই তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলর তুলসী সিনহাকে খবর দেন। তিনি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
দরজা ভেঙে পুলিশ দেখেন মেঝেতে পড়ে রয়েছেন মায়ের দেহ। বিছানায় রয়েছে মেয়ের দেহ। দুটি মৃতদেহের পাশ থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মাস খানেক আগে স্নেহার বাবা মারা গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি রোগে ভুগছিলেন। অন্যদিকে, স্নেহারও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এসব ঘটনা থেকে তাঁরা অবসাদে ভুগছিলেন বলে জানা গিয়েছে। স্নেহা একটি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করতেন বলে প্রতিবেশীরা জানান।
কাউন্সিলর তুলসী রায় সিনহাও জানান, এই দুই মহিলা বেশ কিছুদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। তবে স্নেহার বাবার মৃত্যুর পর তাঁদের অবসাদ বেড়ে যায়। সুইসাইড নোটে তাঁরা প্রতিবেশীদের ধন্যবাদ জানান। তাঁরা লেখেন, বিপদের দিনে, অবসাদের দিনে প্রতিবেশীরা যেভাবে পাশে ছিলেন, তাতে ধন্যবাদ কম পড়ে যান। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফে যাতে তাঁদের পরলৌকিক কাজ করা হয়, সেই বিষয়েও আবেদন করা সুইসাইড নোটে। যাতে পৌরলিক কাজ করতে কোনও অসুবিধা না হয়, ২০ হাজার টাকা তাঁরা রেখে গিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা আধারকার্ড, প্যান কার্ড রেখে গিয়েছেন। পুলিশ সূ্ত্রের খবর, প্যান কার্ড, আধার কার্ড ও ২০ হাজার টাকা মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। একটি বিষের শিশিও মৃতদেহ দুটির পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।